শিক্ষকের কুকীর্তি, চীন জুড়ে ক্ষোভ
ঢাকা, ৪ জুন (লাস্ট নিউজ) : ‘‘অধ্যক্ষ, ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের ছেড়ে তুমি আমাকে নাও’’- আহ্বানটি এক স্কুল শিক্ষকের প্রতি। এক হোটেলে চার ছাত্রীর সঙ্গে রাত কাটানো ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিনব উপায়ে ঘৃণা আর ক্ষোভ জানাচ্ছে চীনের মানুষ। ডয়চেভেল
দক্ষিণ চীনের হানিয়ান প্রদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ চেন জাইপেং। গত মাসে জানাজানি হয়ে যাওয়া একটি ঘটনার আগ পর্যন্ত স্থানীয়রা খুব সম্মান করতো তাকে। হোটেলে অপ্রাপ্ত বয়স্ক চার ছাত্রীর সঙ্গে রাত কাটানোর ছবি প্রকাশিত হবার পর থেকে তিনি সবার ঘৃণার পাত্র। আইনজীবী এবং নারীনেত্রী ইয়ে হাইয়ান ছুটে গিয়েছিলেন সেই স্কুলে। উদ্দেশ্য ঘটনার পর চাকরিচ্যূত শিক্ষকের প্রতি ক্ষোভ এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানানো। তার সমস্ত ক্ষোভ প্রকাশিত হয়েছিল বড় কাগজে লেখা একটি বাক্যে, ‘‘অধ্যক্ষ, আমাকে একটা ঘরে নিয়ে যাও, ছেড়ে দাও বাচ্চা মেয়েগুলোকে”।
‘‘অধ্যক্ষ, ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের ছেড়ে তুমি আমাকে নাও’’- আহ্বানটি এক স্কুল শিক্ষকের প্রতি (প্রতীকী ছবি)
তারপর থেকে প্রতিবাদের ঝড় আরো তীব্র। শিক্ষকজাতির কলঙ্ক হয়ে ওঠা চেন জাইপেংয়ের প্রতি একই আহ্বান জানিয়ে ঘৃণা জানাচ্ছেন অনেকেই। এমনকি পুরুষরাও শয্যায় যেতে চাইছেন হানিয়ান প্রদেশের ওই শিক্ষকের সঙ্গে। বেইজিংয়ের কবি ওয়াং জেং নিজের নগ্ন দেহের ছবি প্রকাশ করেছেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে তাঁর পিঠেও লেখা, ‘‘অধ্যক্ষ, আমাকে একটা ঘরে নিয়ে যাও, ছেড়ে দাও বাচ্চা মেয়েগুলোকে”। এমন প্রতিবাদেই অবশ্য থেমে নেই চীনবাসী। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নানাভাবে চলছে শিশুদের ওপর যৌননিপীড়ন চালানোর তীব্র প্রতিবাদ।
চীনে অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌন হয়রানির শিকার হওয়া নতুন কিছু নয়। দেশটিতে যৌন শিক্ষার প্রচলন হয়নি এখনো, বাবা-মায়েরাও সন্তানদের কিভাবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এমন ভোগান্তি এড়ানো যায়, তা শেখানো হয়নি। বেইজিং নিউজ পত্রিকার চালানো সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, চীনের ৩৭ দশমিক ৪ ভাগ বাবা-মা সন্তানকে কিভাবে যৌন হয়রানির হাত থেকে বাঁচতে শেখাবেন তা জানেন না!
এমন অজ্ঞতার সুযোগ নিচ্ছে কতিপয় মানুষ। উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক পতিতাদের সঙ্গে রাত কাটাতে পছন্দ করেন। সাধারণ মেয়েরা কারো যৌন লালসার শিকার হলেও অন্যায়কারী শাস্তি পায়না। স্কুলগুলো গোপনেই মিটিয়ে নেয় বিষয়টি। কম বয়সিদের যৌন হয়রানির শিকার হওয়া যে চীনে প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাই তার প্রমাণ। গত তিনমাসে স্কুলের শিক্ষক বা অন্য কোনো কর্মীর কাছে ছাত্রীর যৌননিগ্রহের শিকার হওয়ার ঘটনা ঘটেছে কমপক্ষে সাতটি। আট বছরের শিশুও হয়েছে যৌন লালসার শিকার! ‘‘অধ্যক্ষ, আমাকে একটা ঘরে নিয়ে যাও, ছেড়ে দাও বাচ্চা মেয়েগুলোকে”- এ আহ্বানের মাধ্যমে প্রকাশিত ক্ষোভ, ঘৃণা এবং সরকারের কঠোর পদক্ষেপ এমন অনাচার বন্ধ করতে পারলেই হয়!
সূত্র : ডয়চেভেল
You must be logged in to post a comment Login