লেগুনার হেল্পার থেকে সন্ত্রাসী হয়ে ওঠেন হিটার হৃদয় ও ৭ সহযোগী

লাস্টনিউজবিডি, ৩০ জানুয়ারি: ঢাকায় সন্ত্রাসী গ্রুপ ‘ব্রেভ ডেঞ্জার স্ট্রং কিং (বিডিএসকে)’-এর প্রধান হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয় ও তার সাত সহযোগীকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব। রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, বেড়িবাঁধ ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় আধিপত্যসহ চুরি, ছিনতাই, যৌন হয়রানি ও সন্ত্রাসী কার্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন তারা। কাজ করতেন ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবেও।
শনিবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, বেড়িবাঁধ ও সদরঘাট এবং ফরিদপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রুপটির প্রধান হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয়ের (২২) নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য। স্থানীয় বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা হৃদয় গ্রুপ পরিচালনার আগে লেগুনার হেলপার ও চালক ছিলেন। এখনো মাঝেমধ্যে এ কাজ করতেন।
গ্রেফতার অন্যরা হলেন— বিডিএসকে গ্রুপের সমন্বয়ক মো. রবিন ইসলাম ওরফে এসএমসি রবিন (২০), সদস্য মো. রাসেল ওরফে কালো রাসেল (২৫), মো. আলামিন ওরফে ডিশ আলামিন (২১), মো. লোমান ওরফে ঘাড়ত্যাড়া লোমান (২১), মো. আশিক ওরফে হিরো আশিক (১৯), মো. জোবায়ের ইসলাম ওরফে চিকনা জোবায়ের (১৯) এবং মো. সুমন ওরফে বাইট্টা সুমন (২০)। তাদের মোহাম্মদপুর আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি চাপাতি, একটি রামদা, একটি চাইনিজ কুড়াল, চারটি চাকু (বড় ও ছোট), দুটি হাঁসুয়া, একটি কাঁচি ও একটি লোহার রড উদ্ধার করা হয়।
রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে আদাবর থানাধীন তিন রাস্তার মোড় এলাকায় এক ব্যক্তিকে জখম করে তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও অর্থ ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। পরে ভুক্তভোগীকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিছুদিন আগে একই এলাকার এক কলেজ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে একইভাবে মোটা অঙ্কের অর্থ ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। এসব ঘটনার তদন্তে নেমে র্যাব বিভিন্ন সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে। ফুটেজে দেখা যায়, ৮-১০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। এর পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে এবং জানতে পারে, বিডিএসকে গ্রুপের প্রধান হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয়ের নেতৃত্বে ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো ঘটেছে। এরপর গ্রুপটির সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে র্যাব।
খন্দকার আল মঈন বলেন, বিডিএসকের গ্রেফতার আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য দেন। তারা স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তির স্বার্থ হাসিলে ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবেও কাজ করতেন। মাদক সেবন ও ব্যবসা করতেন। রাস্তাঘাটে যৌন হয়রানি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপ্রীতিকর ভিডিও শেয়ারসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তাদের বেশির ভাগের নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় মাদক, চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মারামারির একাধিক মামলা রয়েছে। হৃদয়ের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও রয়েছে। আশিক, সুমন ও জোবায়ের বাদে অন্যরা মামলায় একাধিকবার কারাভোগের পর আবার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছিলেন হৃদয়।
আসামিরা জানান, হৃদয়ের নেতৃত্বে দুই বছর আগে বিডিএসকে গঠন করা হয়। বিডিএসকের সদস্যরা আগে সবুজ বাংলা গ্রুপ, টপ টেন গ্রুপ ও ভাই বন্ধু গ্রুপে ছিলেন।
হৃদয়ের প্রধান সহযোগী গ্রেফতার রবিন ইসলাম স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। বিডিএসকের পাশাপাশি আদাবরে রিকশার গ্যারেজে কাজ করতেন। আলামিন ও লোমান আদাবরে অটোরিকশার চালক ছিলেন। তাদের তিনজনের নামে একাধিক মামলা রয়েছে।
লাস্টনিউজবিডি/পি
সর্বশেষ সংবাদ
- হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আবার বাড়ল
- শ্রীমঙ্গলে উপজেলা প্রশাসনের ইফতার বিতরণ
- বাংলার সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে: মোস্তাফা জব্বার
- সিজিডিএফ হিসেবে গোলাম ছরওয়ার ভূঁঞা এর দায়িত্ব গ্রহণ
- রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ভবনে আগুন
- মসিকের উদ্যোগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা