নতুন হলে শুধু ছয়ফুটের চৌকি পেল জাবি শিক্ষার্থীরা, কবে মিলবে চেয়ার টেবিল?

হাসান সজীব, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ছয়টি হলের মধ্যে দুটি হল উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে। ৩১ জানুয়ারি উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ১৮ নং ছাত্রীহলে রুম বরাদ্ধ দিয়েছে হল প্রশাসন। ইতোমধ্যে ছাত্রীরা ব্যাগ-পত্র নিয়ে নতুন হলে উঠছে৷
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এখনো হলের লিফট সেটাপসহ শেষ সময়ের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। দুটি হলেই আসবাবপত্র হিসেবে ফার্নিচার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘হাতিল’র তৈরি উন্নতমানের খাট (চৌকি) পেয়েছে শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, যে চৌকি দেয়া হয়েছে তার দৈর্ঘ্য মাত্র ছয় ফিট। শিক্ষার্থীদের পা ধরলে, মাথা ধরছে না খাটে। মেলেনি স্টাডি টেবিল-চেয়ার, লকারসহ অন্যান্য আসবাব। প্রশাসন জানাতে ব্যর্থ হয়েছে কবে নাগাদ মিলবে বাকি আসবাবপত্র। ফলে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পড়াশোনার পরিবেশ ব্যহত হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নবনির্মিত হলে আসন প্রত্যাশী ৪৯ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান- গত দুই বছর গণরুম, মিনি গণরুমে থেকেছি। প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের অভাবে ঠিকভাবে থাকাটাও কষ্টকর ছিলো, পড়াশোনা তো দূরের ব্যাপার। নতুন হলগুলোতে ভালো সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে এ আশায় আবেদন করেছি। কিন্তু এখন শুনি, চৌকি ছাড়া অন্য কিছুর ব্যবস্থা হয় নি এখনো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নাসির উদ্দিন বলেন, “আমরা এ বিষয়ে অবগত আছি। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা করে অতি শীঘ্রই আমরা প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নতুন হলগুলোতে সরবরাহ করবো। তবে নির্দিষ্ট কোন তারিখ তা এখন জানাতে পারছি না।”
এদিকে ছেলেদের জন্য ২১ নাম্বার হলে ৬ ফুট দৈর্ঘ্যের চৌকি কেনা হয়েছে যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। নতুন কেনা এসব চৌকিতে ছাত্ররা ঠিকঠাকমতো ঘুমাতে পারবে না বলে মনে করছেন শিক্ষার্থী এবং হল সংশ্লিষ্টরা।
২১ নং হলে সিট পাওয়া ৪৮ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এতো এতো কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন হল তৈরি করা হয়েছে। সে হলে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র তো নাইই, তার উপর যে চৌকি দেওয়া হয়েছে তা ছেলেদের ব্যবহারের অনুপযোগী।
আরেক শিক্ষার্থী জানান, “ছয়ফুটের চৌকি কিভাবে বানায়? একজন সাড়ে পাঁচ ফুট দৈর্ঘের মানুষ যদি এই খাটে শোয়, সে বালিশটা পর্যন্ত রাখতে পারবে না। “
এ বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নাসির উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে উপাচার্য মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
প্রকল্প অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আহসাব হাবীব জানান, “এ ব্যাপারে পিডি (প্রকল্প পরিচালক নাসির উদ্দিন) ভাল বলতে পারবে। তবে আমি যতদূর জানি, প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, হাতিল এটা চেইঞ্জ করে দিবে।”
পরিবর্তন করলে খাটের দৈর্ঘ্য কত হবে এমন প্রশ্নে তিনি জানান, “সেটা আসলে কত হবে তা কনসালটেন্ট (বুয়েট) ভাল বলতে পারবে। ছয়ফুট আট ইঞ্চি হতে পারে, দুই মিটার আর কি। আমরা কনসালটেন্ট এবং সাপ্লায়ারদের সাথে কথা বলছি। তারা কি ভুল করেছে বা কি ঘটেছে এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।”
বাকি আসবাবপত্র কবে নাগাদ আসতে পারে এমন প্রশ্নে উপাচার্য নূরুল আলম বলেন, “সরকার আপাতত ফার্নিচার কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। এই বার (নিষেধাজ্ঞা) না উঠিয়ে নিলে আমরা আসলে দিতে পারব না, আমরা টেন্ডারই করতে পারব না। তবে, আমরা দুই-চার মাসের মধ্যে করতে পারব বলে আশা করছি। তবে জুনের মধ্যে পারব কি না সন্দেহ আছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কম্পিউটার কেনা, গাড়ি কেনা, ফার্নিচার কেনা, বাসা-বাড়ির রঙ করা নিষেধ করে দিয়েছে। আমরা বাজেট থেকে এটা করতে পারব না। আর প্রজেক্টে ফার্নিচার কেনা নিষেধ করে দিয়েছে। যেসব ওয়ার্ক অর্ডার হয়েছে তার ফিফটি পারসেন্ট খরচ করা যাবে, বাকি ফিফটি পারসেন্ট খরচ করা যাবে না।”
লম্বায় ছোট খাটের ব্যাপারে উপাচার্য বলেন, “এ ব্যাপারে আর্কিটেক্ট আহসানুল্লাহ মজুমদার আমাকে ছবি পাঠিয়েছেন। ডিজাইন অনুযায়ী ১.৯ মিটার বা ৬.২৪ ফুটের মত হয়। মানে প্রায় ৬ ফিট ৩ ইঞ্চির মত হয়। সাধারণত সাত ফিটের নিচে তো খাট হয় না। আমরা আবারো তার কাছে জানতে চাইবো এ ব্যাপারে।”
লাস্টনিউজবিডি/আখি
সর্বশেষ সংবাদ
- হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আবার বাড়ল
- শ্রীমঙ্গলে উপজেলা প্রশাসনের ইফতার বিতরণ
- বাংলার সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে: মোস্তাফা জব্বার
- সিজিডিএফ হিসেবে গোলাম ছরওয়ার ভূঁঞা এর দায়িত্ব গ্রহণ
- রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ভবনে আগুন
- মসিকের উদ্যোগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা