জাবির নয়া হলের রুম দখল করছে কারা?

লাস্টনিউজবিডি, ২৬ জানুয়ারি, হাসান সজীব, জাবি: ৩১শে জানুয়ারিতে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ২১ নম্বর ছাত্রহলের রুমগুলোতে তালা দিয়েছে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সরেজমিনে হল পরিদর্শন করে দেখা যায়, ২১ নাম্বার হলের শেষ সময়ের কাজ চলমান থাকলেও দুই -তিন তালার সকল রুমে ছোটবড় তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, পুরো হলের প্রায় সবগুলো হলেই এমন তালা ঝুলিয়েছে বিভিন্ন হল ও ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। নিজেদের ডিপার্টমেন্ট, ফোন নাম্বার অথবা নাম ও ব্যাচ লিখে রেখেছেন দরজায়, কেউ কেউ সাঁটিয়েছে পোস্টার। নতুন হলে একটি রুম নিজের আয়ত্তে রাখতেই পছন্দমত রুমে তালা দিয়েছে বলে জানিয়েছে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি এবার চতুর্থ বর্ষে উঠবো। কিন্তু নন-পলিটিক্যাল হওয়ায় চার জনের রুমে এখনো পাঁচ-ছয়জন থাকতে হয়। তাই এখানে তালা দিয়ে বন্ধুরা মিলে নিজেদের একটা রুম দখলে রাখতে চাচ্ছি।’
নাম ও বিভাগ প্রকাশে অনিচ্ছুক মওলানা ভাসানী হলের ৪৮ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা জেনেছি এর আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল উদ্বোধনের সময়ও এভাবেই দখল করতে হয়েছে৷ তাই তালা লাগিয়ে আগে ভাগেই একটি রুম নিজের আয়ত্তে রেখেছি। অনেককে দেখলাম ছোটখাটো ব্যাগপত্রও নিয়ে আসছেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের (৫১ ব্যাচ) ক্লাস শুরু হবার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে ৩১ জানুয়ারি। এই তারিখকে সামনে রেখে ১৮ নং হল (ছাত্রী) ও ২১ নং হল (ছাত্র) চালু করে দেয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে ২৩ জানুয়ারি নতুন হল দুটির চাবি বুঝে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
হলের কক্ষ দখলের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল। তিনি বলেন, “আমরা প্রশাসন থেকে জেনেছি ২৮ তারিখে লটারি বা অন্য কোন উপায়ে এলোটেড শিক্ষার্থীদের নতুন হলে তুলবে। তালা দিয়ে হল দখল করে নেয়া তো খারাপ। এভাবে দখল নিলে সম্ভাবনা আছে জামায়াত-শিবির কর্মীরাও হলগুলোতে ঢুকে পড়বে, যা বোঝা মুশকিল। আমরা এটাকে কোনভাবেই ছাড় দেব না। প্রশাসনের সাথে কথা বলব। তালা ভেঙে নতুন করে যেন সিট এলোট দেয় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। “
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন, “হলের কক্ষে তালা দেয়ার ঘটনায় অবগত হয়েছি। আমি নবনির্মিত দুই হলের প্রভোস্টদের ব্যবস্থা নিতে বলেছি। তারা তাদের মতো সিদ্ধান্ত নিবেন।”
ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেলের জামায়াত-শিবির আশঙ্কা সম্পর্কে উপাচার্য জানান, “যারা তালা দিয়েছে তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে বলেছি৷”
তালা ভাঙা হবে কিনা এবিষয়ে উপাচার্য বলেন, “হলের ব্যাপার যেহেতু, প্রভোস্টরাই সিদ্ধান্ত নিবেন। ইতোমধ্যে একজন প্রভোস্ট লটারির করার কথা চিন্তা করেছেন। কাল সকালে এ নিয়ে আমি প্রভোস্টদের সাথে বসবো।”
হল-প্রাধ্যক্ষ ও পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাজউদ্দিন সিকদার বলেন,‘এ বিষয়ে আমার জানা নেই। কাউকে আলাদা করে রুম দেয়া হয় নি। রবিবার আমরা কিভাবে কি করা হবে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবো, হল প্রশাসন বলতে আমি একাই আছি আপাতত। সকল রুমের কন্ট্রোল হল প্রশাসন বুঝে নিবে, তালা ঝুলিয়ে দিলেই তো আর হয়ে গেল না। কে কোন রুমে যাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হল প্রশাসন নিবে।’
উল্লেখ্য, ৩১ জানুয়ারি খুলে দেয়ার কথা রয়েছে ছাত্রী ও ছাত্রদের জন্য ১৮ ও ২১ নম্বর হল দুটি। ১০০০ আসন বিশিষ্ট হল দুটিতে এভাবে রুমের দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করছে সংশ্লিষ্টরা।
লাস্টনিউজবিডি/পি
সর্বশেষ সংবাদ
- হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আবার বাড়ল
- শ্রীমঙ্গলে উপজেলা প্রশাসনের ইফতার বিতরণ
- বাংলার সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে: মোস্তাফা জব্বার
- সিজিডিএফ হিসেবে গোলাম ছরওয়ার ভূঁঞা এর দায়িত্ব গ্রহণ
- রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ভবনে আগুন
- মসিকের উদ্যোগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা