জাবি শিক্ষক সমিতি নির্বাচন আগামীকাল, ভোটার প্রায় ৬০৫ জন

লাস্টনিউজবিডি, ২৪ জানুয়ারি, হাসান সজীব, জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল (২৪ জানুয়ারি)। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের সকল মোর্চা একত্রিত হয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ এর একক ব্যানারে নির্বাচনে যাচ্ছে। বিএনপিপন্থী শিক্ষকরাও ‘জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’-র একক ব্যানারে নির্বাচন করছেন।
এবারের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের জন্য দুই প্যানেল থেকে ৩০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৬০৫ জন শিক্ষক এই নির্বাচনে বৈধ ভোটার হিসেবে প্রত্যক্ষ ভোটে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশনার, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. অনিরুদ্ধ কাহালি বলেন, “এবারের নির্বাচনে প্রায় ৬০৫ জন শিক্ষক ভোটপ্রদান করবেন। তবে একটি দুটি ভোট বাড়তে বা কমতে পারে যেহেতু রেজিস্ট্রার অফিস আমাদের এখনো কিছু কারেকশন দিচ্ছেন। আমরা আরেকটি মিটিংয়ের পর কনফার্ম করতে পারব।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষক সমিতি নির্বাচন নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনোই কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নি। এবার যেহেতু দুটি প্যানেল নির্বাচনে এসেছে, বাড়তি কোন প্যানেল হয় নি, ফলে খুবই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে আশা করতে পারি।”
এছাড়াও অধ্যাপক কাহালি জানান, “দুটি প্যানেলের সকলে অত্যন্ত সহযোগিতাপূর্ণ (কো অপারেটিভ) আচরণ করছেন। আমরা যেভাবে বলেছি এবং কোন নতুন কিছু করতে চাইলেও তারা সানন্দে গ্রহণ করছেন। দিনশেষে আমরা শিক্ষক কমিউনিটিরই অংশ এবং আমাদেরকে তারা পুরোপুরি সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।”
এবারের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ থেকে সভাপতি পদে গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ ও সম্পাদক পদে ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) অধ্যাপক ড. এম শামীম কায়সার নির্বাচন করবেন। অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী প্যানেলে সভাপতি হিসেবে ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মো. সোহেল রানা ও সম্পাদক হিসেবে গণিত বিভাগের অধ্যাপক আমিনুর রহমান খান প্রার্থী হয়েছেন।
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের প্যানেল পরিচিতি এবং সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, “শিক্ষক সমিতির কাজ প্রশাসনের আজ্ঞাবহ হওয়া নয় বরং দল-মত নির্বিশেষে সকল শিক্ষকের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাওয়া। আর তাই আমরা যূথবদ্ধ হয়েছি শিক্ষা, গবেষণা, প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়ে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্তরে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি পুনরুদ্ধার, শিক্ষকদের পেশাগত এবং আর্থিক-সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিতকরণ এবং এ লক্ষ্যে নিবেদিত সক্রিয় ও বলিষ্ঠ শিক্ষক-নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাতে চাই।”
ইতোমধ্যে নির্বাচন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল পদে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা, শিক্ষাছুটিকালীন শিক্ষকগণের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা, অস্থায়ী শিক্ষকগণের স্থায়ীকরণ, শিক্ষকদের অফিস কক্ষের স্বল্পতা দূর করা, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবীমা চালু, ক্যাম্পাসে মানসম্মত ডে কেয়ার চালু, শিক্ষার্থীদের জন্য ডিনস এ্যাওয়ার্ডসহ ২২ দফা ইশতাহার ঘোষণা করেছে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ।
এসময় সভাপতি পদপ্রার্থী অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান,” বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হলে কখনোই প্রশাসনের লেজুড়বৃত্তি করবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গলে যদি প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার প্রয়োজন হয় তাও আমরা করবো। আমাদের লক্ষ্য থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ, শিক্ষকদের স্বার্থ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ নিশ্চিত করা।”
নির্বাচনে প্রগতিশীল ও বাম রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ কোন প্যানেলে অংশ না নিলেও জাতীয়তাবাদী ফোরামকে নীরব সমর্থন করছেন বলে জোর গুঞ্জন আছে। তবে, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বললেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, “আমাদেরকে প্যানেল করতে আহ্বান করা হয়েছিল। আমরা আওয়ামী বা বিএনপি কোন অংশের সাথেই মোর্চা করিনি। আমরা আমাদের পছন্দমতো ভোট দিব, সে হিসেবে ব্যক্তিসম্পর্কের জায়গায় মিশ্র ভোট হতে পারে। তবে আমরা সবাই বসে একটি সামষ্টিক সিদ্ধান্তও (কালেকটিভ ডিসিশন) নিব। সেক্ষেত্রে যেসব শিক্ষকরা দূর্নীতি, প্রশাসনের লেজুরবৃত্তি করে তাদেরকে ভোট দিব না। শিক্ষক সমিতির সংবিধিকে যারা আপহোল্ড করে তাদেরকেই আমরা ভোট প্রদানে বিবেচনা করব। সংবিধিতে জাতীয় ইস্যুতে শিক্ষকদের মত প্রকাশের কথা বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যায় দেখলে যাদেরকে কথা বলতে দেখি না, তাদেরকে ভোট দেয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই।”
গুঞ্জন আছে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের প্যানেলে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের মোর্চাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক, আইবিএ অধ্যাপক মোতাহের হোসেন বলেন, “এটা দলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর এখানে যারা আছেন তারা সবাই তো ফারজানা ম্যাডামের সাথেই ছিলেন।”
তিনি নির্বাচন ভাবনা সম্পর্কে বলেন, “বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ নির্বাচনে ভাল করবে। যারা যোগ্য, শিক্ষকদের ভোটে তারাই বের হয়ে আসবেন। ভোট কে কিভাবে দিবে, তা কালকের ফলাফলে বোঝা যাবে।”
নির্বাচনে আপনাদের উপস্থিতি কম দেখা যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ” আমি আছি। সবসময়ই ছিলাম। প্রতিটি ফ্যাকাল্টি মিটিংয়ে, প্যানেল পরিচিত এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে আমি আছি।”
লাস্টনিউজবিডি/পি
সর্বশেষ সংবাদ
- পাতাল রেলের নির্মাণ কাজ বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
- বইমেলা শুরু ১ ফেব্রুয়ারি, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
- রপ্তানিমুখী শিল্প বিকাশে ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল
- রাষ্ট্রপতির কাছে ৭ দেশের রাষ্ট্রদূত-হাইকমিশনারদের পরিচয়পত্র পেশ
- ঢাবি ও অধিভুক্ত কলেজের ১১৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
- জাবিতে এনইএফ’র বৃত্তির চেক বিতরণ