স্বপ্ন নয়, এবার বাস্তবেই বদলে যাচ্ছে সমুদ্র পাড়ের মানুষের ভাগ্য

গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী: ‘পদ্মা সেতু’ উদ্বোধনের দিকে মুখিয়ে আছে দক্ষিনাঞ্চলের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলা, মহিপুর থানা ও কুয়াকাটা পর্যটন এলাকার মানুষ। বাংলাদেশর বিস্ময় পদ্মা সেতুর সুফল পেতে যাচ্ছে দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। এতে ঘুরে দাড়াবে দক্ষিনাঞ্চলের কৃষি, মৎস্য, ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান সহ পর্যটন খাত। কুয়াকাটা পর্যটন, পায়রা সমুদ্র বন্দর, পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, শের-ই-বাংলা নৌ ঘাঁটি, সাবমেরিন ল্যান্ডিং ষ্টেশনের পর এবার এ উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত হবে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এটি এখন আর শুধু মাত্র স্বপ্ন নয়, এবার বাস্তবেই বদলে যাচ্ছে সমুদ্র পাড়ের মানুষের ভাগ্য। এরইমধ্যে ব্যবসায়ীরা তাদের বাণিজ্যিক প্রসার ঘটাতে নতুন পরিকল্পনা শুরু করেছেন।
এছাড়া এ জনপদের কুয়াকাটা পর্যটন, মহিপুর-আলীপুর মৎস্যবন্দর সহ পায়রা সমুদ্র বন্দরের ব্যবসায়িরা সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্তের প্রহর গুনছেন। স্বপ্নের এ সেতুটি উদ্বোধনের পর সর্বদক্ষিণের উপকূলীয় এলাকায় সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের দুয়ার খুলে যাবে, এমনই বক্তব্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সুশীল সমাজের। আগামী ২৫ জুন সেই কাঙ্খিত মাহেন্দ্রক্ষনের অপেক্ষায় এখন সাগর পাড়ের কয়েক লাখ মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, একই সমুদ্র সৈকতে দাড়িয়ে সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দর্শনে গত দুই দশকের বেশী সময় ধরে কুয়াকাটায় আগমন ঘটে দেশী বিদেশি হাজারো পর্যটকের। কিন্তু প্রধান প্রতিবন্ধকতা ছিল যোগাযোগ ব্যবস্থা। এবার পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে অবসান ঘটবে অপ্রতুল যোগাযোগ ব্যবস্থায় মৎস্য, কৃষি পন্য বাজারজাত করার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা থাকবেনা। সমুদ্র বন্দরে পন্য খালাসের পর পন্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আর প্রতিবন্ধকতা থাকছেনা। পায়রা বন্দর হয়ে কুয়াকাটার সাথে সারা দেশের রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। এতে সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হবে সমুদ্র পাড়ের কলাপাড়া, মহিপুর ও কুয়াকাটায়। চাহিদামতো গ্যাস, বিদ্যুৎ সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পেলে গতি ফিরবে অর্থনীতিতে এমনটাই জানিয়েছেন পর্যটন ও মৎস্য খাতে বিনিয়োগকারীরা।
ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা টোয়াকের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ’পদ্মা সেতু চালু হলে কুয়াকাটার একটি আমুল পরিবর্তন হবে। ঢাকা-কুয়াকাটার দূরত্বটা কমে যাওয়ার কারনে ১০-১২ ঘন্টার পথ ৫-৬ ঘন্টায় পৌঁছানো যাবে। এর ফলে কয়েকগুণ পর্যটক বেশি আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ইকো-ট্যুরিজমের প্রসার বাড়বে। সারাবছর পর্যটকে মুখর থাকবে কুয়াকাটার সৈকত।’
মহিপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন আহমেদ মাসুম বলেন, ’পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর গভীর সমুদ্র থেকে আহরনকৃত মাছ খুব অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান করতে পারবে জেলেরা। এতে জেলেরা তাদের কাঙ্খিত মূল্য পাবে।’
কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ’কলাপাড়ার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে পদ্মা সেতুর বদৌলতে। মৎস্য, কৃষি পন্য সহজে বাজারজাত করনে সুফল পাবে জেলে ও কৃষক সহ সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা। দক্ষিনাঞ্চলের উন্নয়নের প্রধান ভূমিকা রাখবে এই পদ্মা সেতু।’
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ’দক্ষিনাঞ্চলের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে পদ্মা সেতু। উদ্বোধনের পর কুয়াকাটায় পর্যটকের আগমন বেড়ে যাবে। বাড়বে পর্যটন খাতে বিনিয়োগ।’
পটুয়াখালী-৪, কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী আসনের সাংসদ অধ্যক্ষ মো: মহিব্বুর রহমান বলেন, ’পদ্মা সেতু দেশের মানুষের কাছে এতদিন ছিল শুধু স্বপ্ন, অবাক বিস্ময়। যে স্বপ্ন ও বিস্ময়কে বাস্তবে পরিনত করতে পারেন একমাত্র জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশ রত্ন শেখ হাসিনা। যার উন্নয়নের মহা পরিকল্পনায় উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ, পরিবর্তন ঘটছে মানুষের ভাগ্যের। স্বপ্ন নয়, এবার বাস্তবেই বদলে যাচ্ছে সমুদ্র পাড়ের কলাপাড়া, মহিপুর, রাঙ্গাবালী ও কুয়াকাটা’র প্রত্যন্ত জনপদের মানুষের ভাগ্য’
লাস্টনিউজবিডি/এসএম
সর্বশেষ সংবাদ
- পদ্মা সেতুর উদ্বোধন: ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সভাস্থলে আসছেন মানুষ
- পদ্মা সেতুর উদ্বোধন: সমাবেশস্থলে জনস্রোত
- পদ্মা সেতু একটি মহাকাব্য : ড. বেনজীর
- পদ্মা সেতুর উদ্বোধন: বাংলাদেশকে ভারত সরকারের অভিনন্দন
- স্বপ্নজয়ের পদ্মা সেতুর নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
- আজ পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী