দেশ দ্রুত শ্রীলঙ্কায় পরিণত হতে যাচ্ছে: ফখরুল

মামুনুর রশিদ, ঠাকুরগাঁও, লাস্টনিউজবিডি, ১৩ মে: বাংলাদেশের অবস্থা দ্রুতই শ্রীলঙ্কার মতো হতে যাচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ দেশের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হতে বাধ্য। কারণ এখানকার অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার (১৩ মে) বিকেলে নিজ নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর খাগড়াবাড়ি বাসুদেবপুর এলাকায় যান মির্জা ফখরুল। সেখানে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত নেতাকর্মীদের পরিবারের খোঁজখবর নেন। পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এরই মধ্যে শ্রীলঙ্কার মতো বংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এত পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করা হয়েছে যে, যা দেশের জনগণের মাথাপিছু প্রায় ৪৭২ ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। খুব শিগগির মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে সমস্যা এত প্রকট আকার ধারণ করবে যে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসা আর মানুষের পক্ষে সম্ভব হবে না।’
আওয়ামীলীগ সরকার সম্পুর্ণ বল প্রয়োগ করে এই দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে নিজের মতো করে নিতে চায় এবং বল প্রয়োগ আবারও ক্ষমতায় যেতে চায়। ইতিপূর্বে তারা জোড় করে ক্ষমতায় গেছে এবারোও যেতে চায়।
তিনি বলেন, এটা আমার নির্বাচনী এলাকা। এখানে গত ১৪ সালের ৫ জানুয়ারি যে একদলীয় নির্বাচন হয়েছিল, সেখানে সাধারণ মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ সময় পুলিশের গুলিতে ২ জন নিহত হয়। আমরা প্রতি বছরই চেষ্টা করি এ সকল পরিবারের পাশে দাড়ানোর জন্য। এ হত্যাযজ্ঞ প্রমাণ করে যে, সরকার সম্পুর্ন বল প্রয়োগ করে এদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে নিজের মত করে নিতে চায়। ২০১৪ সালের নির্বাচনে কি হয়েছে আপনারা তা জানেন, ১৫৪ জনকে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত করেছে। একই সঙ্গে সাধারণ ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যায়নি, তারা নিজেরাই ভোট দিয়ে নির্বাচিত হয়। আজকে এ পরিবারগুলোকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং তাদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। ঐ সময় যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত ছিল না, তাদের বিরুদ্ধে ও একাধিক মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা সব সময় একটি কথা গুরুত্বের সঙ্গে বলে আসছি, নির্বাচন হতে হবে জনগনের ভোট প্রদানের মধ্য দিয়ে। তারা যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সে সুযোগ করে দিতে হবে। এ কারনে অতিতের ঘটনা থেকে আমরা দেখেছি যে, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন কখনও সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য হতে পারে না। তিনি আরও বলেন, সে কারনে এবারও দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার গঠন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হবে। যাতে করে প্রকৃতপক্ষে জনগণের প্রতিনিধিরাই নির্বাচিত হন, এটাই হচ্ছে জনগনের দাবি। এটাই হচ্ছে এদেশের গণতন্ত্র উত্তোরনের একমাত্র পথ। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের ব্যাপারে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি ওবায়দুল কাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আ’লীগের লোকেরা কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে, লুট করেছে। এ সকল লোকজনকে তারা বাদ দিতে চান। এই লোকগুলো তাদের দলে আছে এটা স্বীকার করার মাধ্যমে উনি মেনে নিয়েছেন আ’লীগ এ কাজগুলোর সাথে জড়িত। আমরা প্রতিনিয়ত বলে আসছি আ’লীগের এ সকল লোকেরা বাংলাদেশকে শেষ করছে, লুট করছে, তারা বাংলাদেশকে একটা ভঙ্গুর অর্থনীতিতে পরিনত করতে চাচ্ছে।
বাণিজ্যমান্ত্রী টিপু মুনসি নিজে একজন বড় ব্যবসায়ি। বাংলাদেশের ব্যবসায়িদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তার সুনিদিষ্ট ধারনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়িদের বিশ্বাস করার মানেই হচ্ছে ব্যবসায়িদের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া। আজকে দ্রব্যমূল্য উর্দ্ধগতির যে চিত্র আমরা দেখতে পাই তাতে স্পস্ট করে বোঝা যায়, সরকারের পচ্ছন্ন মদদেই এবং তাদের সহযোগিতায় এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তাদের নিজেদের সিন্ডিকেটরাই আজকে এর জন্য দায়ি। আমরা এ কারনে আগেই বলেছি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারনে বানিজ্যমন্ত্রী সেই সাথে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। দেখা যাচ্ছে আ’লীগই বাংলাদেশকে একটি সম্পুর্ন ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিনত করছে। তাদের সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, টাকা পয়সা লুট, অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার কারণে অবিলম্বে সরকারের পতদ্যাগ করা উচিত। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেল বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর করিম, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নুর, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, জগন্নাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: কায়েসসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠের নেতৃবৃন্দ ও ইউনিয়ন বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর পরে গড়েয়ায় ৫ জানুয়ারি নির্বাচন ও দেলোয়ার হোসেন সাঈদির রায়ের পরবর্তী সহিংসতা সহ মোট ৯ জনের নিহততের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা শেষে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ভেলাজানে একটি সভায় যোগ দেন।
এ সময় দেশের চলমান সংকটের দায়ে ও আসন্ন ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
লাস্টনিউজবিডি/এসএম
সর্বশেষ সংবাদ
- বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী
- পি কে হালদারের সকল কোম্পানির শেয়ার ফ্রিজের নির্দেশ
- মধ্যরাত থেকে ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা
- বুবলী-আদরের ট্রেলারে, নেটিজেনদের চোখ কপালে
- জাবিতে ‘Students Attitudes on Whistleblowing’ শীর্ষক ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত
- বিরামপুরে আদমশুমারী বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত