ব্রিটিশ বাংলা নিউজ চ্যানেল বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়ার একান্ত সাক্ষাতকার
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ‘ব্রিটিশ বাংলা নিউজ চ্যানেল’ ‘সমকালীন বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি নতুন অনুষ্ঠান শুরু করেছে। দেশ বিদেশে বিশেষ করে রাজনীতি, সামজনীতি, অর্থনীতি ও সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা সফলতা অর্জন করেছেন তাদের সাক্ষাতকার গ্রহণ এই অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত গুনীজনদের কাছ থেকে দেশ ও সমাজে বিরাজমান পরিস্থিতি এবং জনগণ, দেশ, স্বধীনতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের সম্পৃক্ততা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে। গত ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠানের প্রথম আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বাসস’র সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক এবং বর্তমানে ইংরেজি দৈনিক ‘বাংলাদেশ নিউজ’ এবং বাংলা দৈনিক ‘বাংলাদেশের খবর’-এর সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক বিকাশ চৌধুরি বড়–য়া। তিনি সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়ার কাছে দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতি, লকডাউন নিয়ে রাজনীতি, সম্প্রতি ঢাকার রাস্তায় একজন নারী চিকিসকের হেনস্তা হওয়া, দেশের উন্নয়ন ও তৃণমূল পর্যায়ে এর সুফল, বঙ্গবন্ধুর সংগে সংশ্লিষ্টতা এবং স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়নসহ নানা প্রশ্ন করা হয়। দীর্ঘ এই সাক্ষাতকারের সারমর্ম কেবল আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়ার ভাষ্যে এখানে তুলে ধরা হলো।
লকডাউনের সংগে রাজনীতির কোন সম্পর্ক আছে বলে আমি মনে করিনা। করোনার দ্রুত সংক্রমণ থেকে জনগণকে রক্ষায় এই লকডাইন জরুরি ছিল। এর সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। আমরা দেখতে পারছি গত কয়েকদিনে সংক্রমণের হার দ্রুত গতিতে কমছে। সংক্রমণের হার প্রায় ৫০ পার্সেন্টের কাছে পৌঁছে গেছিল। সেখান থেকে এখন ১৩ পার্সেন্টে এসে ঠেকেছে। আমি মনে করি জনগণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সংক্রমণের হার দ্রুত পূর্বের অবস্থা অর্থাৎ ২/৩ পার্সেন্টে চলে আসবে।
= পচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক স্বৈরাচার ক্ষমতা দখল করে রাজনীতিতে দূর্বৃত্তায়নের প্রয়াস চালায়। তারা এবং তাদের বশংবদরা ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করে। এক শ্রেণীর পুলিশ ও সরকারি কর্মচারির মধ্যে এই মানসিকতা এখনও অক্ষুন্ন রয়েছে। তারা সভ্যতা-ভব্যতার ধার ধারেনা, কাকে কি বলবে, আর কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। বাংলাদেশে কোনো চিকিৎসক আইডি কার্ড সংগে রাখেন কি-না জানি না। ডাক্তারদের এ্যপ্র্রোনই যথেষ্ট। দেশে কোনো ভুয়া ডাক্তার এ্যপ্র্রোন পরে ঢাকার রাস্তা দিয়ে গাড়িতে করে যাওয়ার সময় ধরা পড়েছে, এমন খবর জীবনে শুনিনি। তারপরও তাকে নাকি ভুয়া ডাক্তার ধারণা করা হয়েছিল। এ্যপ্র্রোনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো দেখানোর পর তাকে আটকে রাখা মোটেই সমিচীন হয়নি বলে আমি মনে করি।
= অতীতে বাংলা বলতে ভুখা-নাঙ্গা মানুষের আবসভূমি বোঝাত। এই অবস্থা পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলার স্বাধীনতার স্বপ্ন তিনি ’৭১ সালে দেখেননি। এই স্বপ্ন তার ’৪৭ সালে ভারত বিভাগকালীন। বৃটিশরা ভারতবর্ষের স্বধীনতা দিতে রাজি হলে শহিদ হোসেন সোরাওয়ার্দীকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু দুই বাংলা নিয়ে পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবি করেন। কিন্তু মুসলিম লীগ এবং ভারতের জাতীয় কংগ্রেস পার্টি এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করায় তা সম্বব হয়নি। সেদিনই বঙ্গবন্ধু শপথ নিয়েছিলেন পূর্ব বাংলাকে স্বাধীন করার। তিনি জানতেন পশ্চিম পাকিস্তানীরা বৃটিশদের চেয়ে বড় শোষক ও পীড়ক হবে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে এসব তথ্যের উল্লেখ আছে।
= বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুফল আমরা এখন পাচ্ছি। পাকিস্তান আমলে আমাদের দেশ বৈদিশক মুদ্রা অর্জন করত। আর তা ব্যয় হতো পশ্চিম পাকিস্তানে। মোট উপার্জনের শতকরা ৩০ ভাগ বাংলাদেশে বরাদ্দ করা হতো। সেখানেও কারচুপি ছিল। সময়মত অর্থ ব্যয় করতে না পারার অজুহাতে তা পশ্চিম পাকিস্তানে ব্যয় করা হতো। আজ আমরা আয় করি, আমরাই তাই ব্যয় করি। এর সুফলতো বিশ্ববাসী দেখতে পাচ্ছে। আজ পাকিস্তান কোথায়, আর বাংলাদেশ কোথায়। পাকিস্তানী অর্থনীতিবিদদের ভাষ্য মতে, বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে ১৫ বছর এগিয়ে গেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় পৌঁছাতে হলে আগামী ১৫ বছর তাদের পরিকল্পনা মাফিক অগ্রসর হতে হবে। ততদিনে বাংলাদেশ অবশ্য আরো অনেক এগিয়ে যাবে। বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০৩০ সালে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর ও সুইডেনকে পিছনে ফেলে বিশ্বের ২৩তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। আমাদের এই সাফল্য মুলত গত এক দশকের সংগ্রামের ফসল। ২০১০ সালে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমাদের অর্থনীতির পালে হাওয়া লেগেছে। এরআগে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার সরকার অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড হাতে নেয়। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে সম্পূর্ণ বিদ্বেষবশত: সেসব কর্মসূচী বাতিল করে দেয়। এখানে বাংলাদেশের মানুষকে ধন্যবাদ দিতে হয়, তারা বুঝতে পেরেছেন সরকারে ধারাবাহিতা না থাকলে উন্নয়ন কর্মকান্ড থমকে যাবে। তাই গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে তারা আওয়ামী লীগকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছে। আজ পদ্মা সেতু, কর্নফুলি ট্যানেল, হাজার মোগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন একাধিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, দূর সমুদ্র বন্দর এবং মেট্র্রোরেলের মত মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। কয়েক বছর আগেও এসব প্রকল্পের কথা স্বপ্নেও ভাবতাম না। আজ বাংলাদেশের রিজার্ভ প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলার।
LIVE Program from London-based British Bangla News Channel on ”CONTEMPORARY BANGLADESH-FACE TO FACE WITH AN EDITOR”
– you can watch on Friday 23 April at 7 p.m. Bangladesh Time and 3 p.m. Holland Time. Here are the Links:
Facebook: https://www.facebook.com/Britishbanglanews/posts/2938766249688311
একটা কথা মনে রাখতে হবে ’৭১ সালে বাংলদেশের জনসংখ্যা ছিল সাত কোটি, আজ তা ১৮ কোটি। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য আমাদের খাদ্য উৎপাদন করতে হচ্ছে। তারপরও আমরা আজ খাদ্যে স্বয়ংস্মপূর্ণ। আমাদের সুগন্ধী চাল বিশ্বেও বহু দেশে যাচ্ছে। বিশেষ করে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ রফতানীকারক দেশ। আর ইলিশ উৎপাদনে প্রথম।
স্বাধীনতার পর ৫০ বছর খুব একটা বেশি সময় নয়। এরইমধ্যে গত বছর মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, বাংলাদেশে একটি পরিবারও গৃহহীন থাকবে না।
এ লক্ষ্যে ২০২০ সালে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবারের তালিকা তৈরি করা হয়। যার মধ্যে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার এবং ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি পরিবার রয়েছে যাদের ১ থেকে ১০ শতক জমি আছে কিন্তু আবাসন ব্যবস্থা নেই। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে গত জানুয়ারি মাসে সারা দেশে ৬৬ হাজার ১৮৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে আধা পাকা ঘর বিতরণ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এরপর দেশে আর কোন গৃহহীন পরিবার থাকবে না। শুধু বাড়ি নয়, এসব গৃহহীন পরিবারের জীবিকার ব্যবস্থাও করে দেয়া হচ্ছে। তবে করোনা মহামারির কারণে আমাদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড কাঙ্খিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়িত নাও হতে পারে।
বর্তমান সরকারের আরেকটি সাফল্য হচ্ছে দারিদ্রের হার কমিয়ে আনা। এ লক্ষে বয়ষ্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তদের ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সর্বোপরি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মাসিক ভাতা এবং চারটি উৎসব ভাতা চালু করা হয়েছে। এতে বিশেষ করে অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা খুবই উপকৃত হচ্ছেন। সরকার তাদের জন্য একটি আবাসন প্রকল্পও গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পের অধীনে অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা বিনা মূল্যে বাড়ি পাবেন।
= বর্তমানে দেশে ১০টি মেঘা প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। এগুলো হচ্ছে- পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, কর্নফুলি ট্যানেল, রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র, ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্প, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেন, মাতাবাড়ি দূর সমুদ্র বন্দর, পায়রা দূর সমুদ্র বন্দর, বঙ্গবন্ধু রেল সেতু ও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ। এসব প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে দেশ উন্নত বিশ্বের কাতারে চলে যাবে।
= এটা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই সাংবাদিক এবং সাংবাদিকতার মান-মর্যাদা, ঐতিহ্য, ভাবমূর্তি, বিশ্বাসযেগ্যতা- কোনটাই আর আগের পর্যায়ে নেই। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, আগে এটি ছিল সমাজ সেবামূলক পেশা। মানুষ ভালোবেসে এখানে আসতেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ছাত্ররা এই পেশায় আকৃষ্ট হতেন। এখন আর সেই অবস্থা নেই। এখন অনেকেই আসছেন বৈষয়িক ভাবনা থেকে। তারা সাংবাকিতাকে অন্য পাঁচটি বৃত্তিমূলক পেশার মত মনে করেন। পেশার গুনগত মান বা ভাবমূর্তি নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই।
গত ৫০ বছরে সংবাদপত্রের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। এখন রাজধানী ঢাকা থেকেই ৮শ’র বেশি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়, টিছি চ্যানেল আছে কমবেশি দেড়শ’। মিডিয়ার এই উড়ন্ত বিকাশের সংগে পাল্লা দিয়ে এর বিশ্বাসযোগ্যতা ও ভাবমূতি ক্রমেই বিতর্কিত হচ্ছে। কারণ একশ্রেণীর সাংবাদিক পেশায় ঢুকতে না ঢুকতেই গাড়ি-বাড়ির মালিক হতে চান। তারা নানারকম অনিয়মের আশ্রয় নেন। সংখ্যায় কম হলেও এই শ্রেণীর পেশাজীবীদের জন্য গোটা সাংবাদিক সমাজ সমালোচিত হচ্ছেন।
= বঙ্গবন্ধুর সান্বিধ্যলাভের প্রথম সুযোগ হয়েছিল ১৯৭০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। তখন আমি বিএম কলেজের ছাত্র এবং ছাত্রলীগ নেতা। সামনে জাতীয় নির্বাচন। তাই নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু ভোলায় যন। তাকে সম্বর্ধনা জানানোর জন্য লঞ্চঘাটে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ শত শত সাধারণ মানুষের ভীড়। আমরা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ছিলাম সামনের সারিতে। বঙ্গবন্ধু কাছাকাছি আসতেই আমি স্লোগান শুরু করি- ‘ঢাকা না পিন্ডি। ঢাকা, ঢাকা’। বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘না, শ্লোগান হয়নি। আমি বলি তোরা ধর। বল- শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি। প্রগতি, প্রগতি। এটাই তোদের (ছাত্রদের) শ্লোগান’।
এরপর বঙ্গবন্ধুর সফরসঙ্গীও হই। বহু অনুষ্ঠনে কাছ থেকে তাকে দেখেছি। প্রখর ধী ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন উঁচু-লম্বা একজন মানুষ। আত্মসম্মানবোধ ছিল সর্বোচ্চ। এক সভায় তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে অনেকের অবদান আছে, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাই বলে কারও চোখ রাঙানি শেখ মুজিবুর রহমান বরদাশত করবে না’।
= যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তা আজ অনেকটাই সফল। প্রথমত দখলদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে জুলুমবাজ উপনিবেশিক শক্তি, যারা দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে আমাদের শাসন-শোষণ করে আসছিল তাদের কবল থেকে দেশ মুক্ত হয়েছে। আমাদের স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ আজ কঠিন বাস্তব। এটা মুক্তিযুদ্ধের প্রধান ও বিশাল অর্জন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ হাতে পান। হানাদাররা পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করেছিল। তারা বেছে বেছে আমাদের সব বুদ্ধিজীবীকেও হত্যা করে। যাতে করে জাতি হিসেবে আমরা পঙ্গু হয়ে যাই। এরপরও বঙ্গবন্ধু এক বছরের মধ্যে আমাদের একটি যুগোপযোগী সংবিধান উপহার দেন। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত কোন দেশ এত অল্প সময়ে সংবিধান রচনা করতে পেরেছে বলে আমার জানা নেই। সেই সংগে দেশ পুনর্গঠনের জন্য তিনি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ওই পরিকল্পনার সুফল যখন দেশ পেতে শুরু করেছে তখনই দেশি-বিদেশী চক্রান্তে সপরিবারে তিনি নিহত হন। আল্লাহর অশেষ রহমতে তাঁর দুই কন্যা বিদেশে থাকায় তারা প্রানে বেঁচে যান। আজ তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তব রূপলাভ করছে। আজ বহু সূচকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে। জাতিসংঘ পর্যন্ত বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার ‘উদীয়মান বাঘ্র’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজ মুক্তিযুদ্ধের সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। আজ দেশে একজনও অনাহারে মারা যায়না। প্রত্যন্ত এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে গেছে। একারণে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর সূচকে আমরা জাতিসংঘের সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছি। তাছাড়া মুজিবর্ষে দেশের শতভাগ গ্রাম বিদ্যুতায়নের আওতায় এসেছে।*