শেয়ারবাজারে টানা দরপতন অব্যাহত

লাস্টনিউজবিডি, ২২ মার্চ: টানা দরপতন অব্যাহত রয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। বড় দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ফলে অস্বাভাবিক দরপতন হচ্ছে।
রবিবার ঢাকার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই বিক্রির চাপ দেখা দেওয়ায় সূচকের নেতিবাচক প্রবণতাও লক্ষ করা যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিক্রির এই চাপ বাড়তে থাকায় সূচকের পতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। দিনের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সব কয়টি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়। সেই সঙ্গে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন হারিয়েছে ডিএসই।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। এ হিসাবে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৭ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা।
গত দুদিনে বড় দরপতনে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১৩ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে।
বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রবিবার লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যাপ্ত অহেতুক বিক্রির চাপ অব্যাহত থাকে। মূলত বিনিয়োগকারীদের এই বিক্রির চাপেই শেয়ারবাজারে ধস নেমেছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও
ইউনিটের দাম কমায় প্রথম ৬ মিনিটের লেনদেনেই ডিএসইর প্রধান সূচক ২৪ পয়েন্ট কমে যায়। সময়ের সঙ্গে সূচকের পতনপ্রবণতা বাড়ে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৪৯ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে দুদিনেই ডিএসইর প্রধান সূচক কমল ১৬৫ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় পতন হয়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকের। আগের দিনের তুলনায় এ সূচকটি ৩৯ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ২১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া মাত্র ৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩৯টির। আর ৭৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬১৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৮৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৬৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৮৪ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবির ৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৮ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা।
এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, লাফার্জহোলসিম, রহিম ফুডস, সামিট পাওয়ার, জিবিবি পাওয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো ও ওয়ালটন।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৬৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৭টির এবং ৪৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
Comments are closed