সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সতর্কতা

লাস্টনিউজবিডি, ২৮ জানুয়ারি: সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় আমেরিকায় উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভগ। চরমপন্থী সংগঠনগুলো যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে বলে গোয়েন্দারা সতর্ক করায় বুধবার (২৭ জানুয়ারি) দেশজুড়ে এই সতর্কতা জারি করা হয়।
এক সপ্তাহ আগে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন জো বাইডেন। হামলার আশঙ্কা থাকলেও বাইডেনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়। ওইসময় পুরো ওয়াশিংটন ডিসিকে ঢেকে ফেলা হয় নিরাপত্তার চাদরে।
তবে এবার আরও বেশি সতর্ক মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থাগুলো। বুধবার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী বেশ কিছুদিন দেশজুড়ে সন্ত্রাসী হামলার সতর্কতা জারি থাকবে। যে কোনো সময় হামলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অবশ্য কোথায় বা ঠিক কী ধরনের হামলার ঘটনা ঘটতে পারে সেটা স্পষ্ট করেনি সংস্থাটি। তারা বলছে, সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয়ের পর থেকে বেশ কিছু চরমপন্থী সংগঠন হামলার পরিকল্পনা করছে। গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনায়ও ওইসব সংগঠনের জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নাম জানাতে রাজি হয়নি নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টরা।
জো বাইডেনের ক্ষমতাগ্রহণের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে সশস্ত্র হামলা ও সহিংসতা চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। এতে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত হয় পাঁচ জন। সমর্থকদের চালানো এই হামলায় ট্রাম্প উস্কানি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই ঘটনার পরই বহুমুখী তৎপরতার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। এমনকি মোতায়েন করা হয় ন্যাশনাল গার্ডের সেনাও। সম্ভবত সেই কারণেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের দিন তারা বড় কোনো অঘটন ঘটাতে পারেনি বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এখনও তারা নানা ধরনের পরিকল্পনা করছে বলে মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে।
বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, ৫০টি অঙ্গরাজ্যের পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া চরমপন্থী একাধিক সংগঠনের কর্মকাণ্ড নজরদারিতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও চলছে নজরদারি।
গত বছর নভেম্বরের ৩ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর থেকেই নির্বাচনে জালিয়াতি ও ভোট গণনায় কারচুপি হয়েছে বলে একের পর এক অভিযোগ করতে থাকেন ট্রাম্প। অবশ্য এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করেননি তিনি। এমনকি আদালতেও খারিজ হয়ে যায় ট্রাম্পের এসব অভিযোগ।
এরপর গত ৬ জানুয়ারি বাইডেনের বিজয় চূড়ান্ত করতে বসা ক্যাপিটল ভবনে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে হামলা চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। অভিযোগ রয়েছে, ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালাতে সমর্থকদের উস্কানি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
হামলার আগে সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেছিলেন, দেশকে বাঁচাতে হলে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তোমরা যদি তীব্র লড়াই না কর তাহলে তোমাদের আর কোনো দেশ থাকবে না। এরপরই দলে দলে ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালায় তার সমর্থকরা।
সেদিনের হামলায় একাধিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্যরাও ছিলেন বলে তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তারাই এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্তে সহিংস আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা করছে। এ কারণেই দেশজুড়ে এই হামলার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
গত এক বছরের মধ্যে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এই প্রথম কোনো সতর্কতা জারি করেছে।-দ্য গার্ডিয়ান
লাস্টনিউজবিডি/ডি
সর্বশেষ
Comments are closed