রংপুরে উন্মোচন হলো বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য

লাস্টনিউজবিডি, ৯ ডিসেম্বর: নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য ‘আলোকবর্তিকা’ উম্মোচন করা হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে পূরণ হলো এতদিনের দাবি পূরণ। আর বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্যের মাধ্যমে আলোকিত হলো ভাস্কর্য-ম্যুরালের নগরখ্যাত রংপুর।
আজ বুধবার সকাল ১১টায় বেগম রোকেয়ার জন্ম ও প্রয়াণ দিবসে ভাস্কর অনীক রেজার হাতেই লাল কাপড়ে মোড়ানো রোকেয়ার ভাস্কর্যটি উন্মুক্ত করা হয়।
উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন লেখক রেজাউল করিম মুকুল, সিনিয়র সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদল, কবি ও অধ্যাপক শাহ্ সুলতান তালুকদার, সহকারী অধ্যাপক আজাহার আলী দুলাল, সহকারী অধ্যাপক এআইএম মুসা, সহকারী অধ্যাপক অনিমা বর্মণ, সহযোগী অধ্যাপক মাহফিজুল আলম সুজন, কবি ও প্রকাশক মাসুদ রানা শাকিল প্রমুখ।
আরো পড়ুন: বেগম রোকেয়া পদক পেলেন যে ‘পাঁচ নারী’
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের (রসিক) অর্থায়নে রোকেয়ার ভাস্কর্য নির্মিত হলেও ভাস্কর্য উন্মোচন অনুষ্ঠানে তাদের কোনো কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিকে দেখা যায়নি। এ নিয়ে অনুষ্ঠানে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেন অতিথিরা।
এ ব্যাপারে ভাস্কর অনীক রেজা বলেন, ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ শেষে এটি উদ্বোধনের জন্য সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান, প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটুসহ সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। কিন্তু তারা আমাকে এটি উন্মোচন করতে অনুমতি দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে তাদের কারো না আসার ব্যাপারে আমি ব্যাখ্যা দিতে পারব না।
আরো পড়ুন: বেগম রোকেয়া পদক পাচ্ছেন ৫ নারী
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৫ লাখ টাকার অর্থায়নে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর উচ্চতা মাটি থেকে ২০ ফুট। এর মধ্যে শুধু পাথর-কংক্রিট থেকে বেরিয়ে আসা রোকেয়ার অবয়ব লম্বায় প্রায় ১২ ফুট। সমাজ পরিবর্তনে শিক্ষার শক্তি নিয়ে বেরিয়ে আসা রোকেয়ার এ ভাস্কর্যটিতে জন্ম-মৃত্যু সালসহ তার লেখা কিছু বই ও বাণী রয়েছে।
রংপুর সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, বিগত সিটি মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুর আমলে বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। এরপর ধীরগতিতে চলা নির্মাণ কাজ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। মাটি থেকে শুধু উঁচু বেদী তৈরির পরে কয়েকটি ইটের পিলার ছাড়া তখন আর কিছুই ছিল না। অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকা বেদীটি ভরে ছিল ধুলোবালি আর বিভিন্ন ফেস্টুন পোস্টারে।

মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা সেই বেদীটি দেখে হতাশ হয়েছিল স্থানীয় লোকজন ও শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন মহল থেকে তখন ওই ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। অবশেষে বছর তিনেক বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয় নির্মাণ কাজ। সেই নির্মাণ কাজের সমাপ্তি শেষে বুধবার সকাল ১১টায় বেগম রোকেয়া দিবসেই উন্মুক্ত করা হয় ভাস্কর্য ‘আলোকবর্তিকা’।
রোকেয়া জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮০ সালে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার অর্ন্তগত পায়রাবন্দ গ্রামে। তার পিতা জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের জমিদার ছিলেন। তার মাতা রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী। রোকেয়ার দুই বোন করিমুননেসা ও হুমায়রা, আর তিন ভাই যাদের একজন শৈশবে মারা যায়।
১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। সেসময় তিনি ‘নারীর অধিকার’ নামে একটি প্রবন্ধ লিখছিলেন। তার কবর উত্তর কলকাতার সোদপুরে অবস্থিত যা পরবর্তীকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক অমলেন্দু দে আবিষ্কার করেন ।
লাস্টনিউজবিডি/ এসএমএ
সর্বশেষ সংবাদ
Comments are closed