জোর করে উইঘুর মুসলিমদের শূকরের মাংস খাওয়াচ্ছে চীন

লাস্টনিউজবিডি, ৫ ডিসেম্বর: চীনের শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের উপর নির্যাতন আজ নতুন নয়। উইঘুর মুসলিমদের উপর করা নির্যাতনের দৃশ্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে বহু আগ থেকেই। সম্প্রতি জানা গেছে, প্রতি শুক্রবার বন্দীশিবিরে থাকা উইঘুর মুসিলমদের জোর করে ইসলাম ধর্মে নিষিদ্ধ শুকরের মাংস খাওয়াচ্ছে শি জিনপিংয়ের সরকার।
২০০৯ সালে শিনজিয়াং প্রদেশের কিছু জায়গায় সাম্প্রদায়িক অশান্তি হওয়ার পর থেকে উইঘুর মুসলিমদের ওপর অকথ্য অত্যাচার চালাচ্ছে চীনা প্রশাসন। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামেনেস্টি কিংবা ইসলামিক দেশগুলোর সংগঠনগুলো এই বিষয়ে বেজিংয়ের বিরুদ্ধে মুখ খুললেও নিজেদের স্বভাবে একচুল পরিবর্তন করেনি শি জিনপিংয়ের দেশ।
আল জাজিরাসহ একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উইঘুর মুসলিমদের জোরপূর্বক শূকরের মাংসওয়ানোর পাশা খাপাশি শিনজিয়াং অঞ্চলে শূকরের খামারের সংখ্যাও বাড়াচ্ছে চীন।ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ নির্মূল করতে এসব বন্দীশিবিরেই তাদের শূকর খেতে দেওয়া হয়। দেশটির কারাগারে বিভিন্ন সময়ে আটক থাকা বন্দীরা বিস্ফোরক এসব তথ্য জানিয়েছেন। চীনের ধর্মনিরপেক্ষ মনোভাব সম্পন্ন করে গড়ে তুলতে বিশেষ ধরনের বন্দীশিবিরে নেওয়া হয় উইঘুর মুসলিমদের।
সাইরাগুল সাউতবে চীনের শিনজিয়াংয়ের রি-এডুকেশন ক্যাম্প থেকে মুক্তি পেয়েছেন দুই বছরেরও বেশি সময় আগে। তিনি দুই সন্তানের মা। কিন্তু তাকে এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় তাদের ওপর চালানো ভয়াবহতা, অমানবিকতা আর সহিংসতা। এসবই তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন আটক অবস্থায়।
সাইরাগুল সাউতবে বর্তমানে বসবাস করছেন সুইডেনে। তিনি একজন ডাক্তার এবং শিক্ষাবিদ। সম্প্রতি তিনি একটি বই প্রকাশ করেছেন। তাতে তিনি ওই বন্দীশিবিরের ভয়াবহতা, যা প্রত্যক্ষ করেছেন তা তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে রয়েছে প্রহার, যৌন নির্যাতন, জোর করে বন্ধ্যাকর। সম্প্রতি তিনি এসব নিয়ে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আলজাজিরাকে।
শিনজিয়াংয়ে মুসলিম সংখ্যালঘু ও অন্যান্য উইঘুরদের ওপর কিভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে তার বর্ণনা দিয়েছেন। সাইরাগুল সাউতবে বলেছেন, এসব সংখ্যালঘুকে জোরপূর্বক শূকরের মাংস খাওয়ানো হচ্ছে। এমনকি উইঘুরে শূকরের ফার্ম বিস্তৃত করেছে চীন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি শুক্রবার আমাদের শূকরের মাংস খেতে বাধ্য করা হতো। তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ দিনটিকে বাছাই করে নিতো। কারণ এ দিনটি সপ্তাহের অন্য দিনের চেয়ে বেশি পবিত্র মুসলিমদের কাছে।’
যদি কেউ এই মাংস খেতে অস্বীকৃতি জানাতো তাহলে তার ওপর নেমে আসতো নির্দয় নিষ্ঠুর শাস্তি। তিনি দাবি করেন, এসব নীতি গ্রহণ করা হয়েছে উইঘুর মুসলিম বন্দীদের অবমাননা করতে এবং তাদের হীন করার উদ্দেশ্যে। সাইরাগুল সাউতবে বলেন, যখন শূকরের মাংস খেতে বাধ্য করা হতো তখনকার অনুভূতি প্রকাশ করার কোনো ভাষা নেই।
লাস্টনিউজবিডি/ এসএমএ
সর্বশেষ সংবাদ
Comments are closed