আমাদের বক্তব্য ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে, বঙ্গবন্ধুর নয়: মামুনুল হক

লাস্টনিউজবিডি, ২৯ নভেম্বর: ‘আমাদের বক্তব্য ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে, কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
এ সময় গত ২৭ নভেম্বর রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে আটক ২৩ মিছিলকারীকে অনতিবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী প্রমুখ।
‘আমার বক্তব্য দ্ব্যর্থহীন’ উল্লেখ করে মামুনুল বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে একজন মরহুম মুসলিম নেতা হিসেবে পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা করি এবং তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি। কখনো কোনোভাবেই এমন একজন প্রয়াত জাতীয় নেতার বিরুদ্ধাচারণ করি না এবং করাকে সমীচীনও মনে করি না। আবারও স্পষ্ট করে বলছি, আমাদের বক্তব্য ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে, কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নয়।’
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘আমাদের এমন স্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান থাকার পরও লক্ষ করছি, একটি মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছে। আর এ জন্য জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের অমূলক ও কল্পিত অভিযোগ আমার ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।’
হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমার বাবা উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ এবং দেশের একজন বর্ষীয়ান নেতা মরহুম শায়খুল হাদীস আজিজুল হক; যিনি চারদলীয় জোটের শীর্ষ চার নেতার অন্যতম একজন ছিলেন এবং তার দেওয়া আদর্শিক-৫ দফার সঙ্গে একমত হয়েই ২০০৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। তিনি ধর্মীয় ও রাজনৈতিক যুগপৎ একটি ঐতিহাসিক ধারার প্রতিনিধিত্ব করে গেছেন, যা উপমহাদেশে দেওবন্দি ধারা হিসেবে পরিচিত। আমি ব্যক্তিগতভাবে সেই ধারারই একজন রাজনৈতিক কর্মী।’
খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘কোনো ষড়যন্ত্র অথবা গোপন আঁতাতের মাধ্যমে রাষ্ট্র কিংবা সরকারবিরোধী কোনো কর্মসূচি আমাদের নেই। অতীতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জোটবদ্ধভাবে রাজনীতিতে ভূমিকা রাখলেও বর্তমানে আমাদের সংগঠন খেলাফত মজলিস এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি কোনো রাজনৈতিক জোটে যুক্ত নই।’
তিনি বলেন, ‘কিছুদিন ধরে ঢাকার ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের ইস্যুতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে দেশের ধর্মীয় অঙ্গন। স্বাভাবিকভাবেই ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষ কিংবা প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণ অনৈসলামিক সংস্কৃতি হওয়ায় আলেমসমাজ এর প্রতিবাদ করছে। সেই সূত্রে আমিও ভাস্কর্য তথা মূর্তি নির্মাণের বিরুদ্ধাচারণ করে বক্তব্য তুলে ধরেছি। কিন্তু সুকৌশলে একটি মহল ভাস্কর্য নির্মাণের এই বিরোধিতাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরোধিতা বলে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করছে।’
লাস্টনিউজবিডি/সাজু
সর্বশেষ সংবাদ
Comments are closed