উত্তরপ্রদেশে হিন্দু-মুসলিম বিয়ে ঠেকাতে অর্ডিন্যান্স

লাস্টনিউজবিডি, ২৬ নভেম্বর: ভারতের উত্তরপ্রদেশ সরকার হিন্দু-মুসলিম বিয়ে ঠেকাতে রাতারাতি একটি অর্ডিন্যান্স এনেছে।
এটিকে ভারতে অনেকেই নাৎসি জার্মানির নেতা হিটলারের আনা ইহুদিবিরোধী আইনের সঙ্গে তুলনা করছেন। খবর বিবিসির।
এ কারণে প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্য নাথকে অনেকে টিলারের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
১৯৩৪ সালে নাৎসি জার্মানিতে ইহুদিদের সঙ্গে তথাকথিত ‘এরিয়ান’ বা আর্য বংশোদ্ভূতদের বিয়ে ও যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ ঘোষণা করে একটি আইন আনা হয়েছিল।
ভারতের সুপরিচিত বামপন্থী নেত্রী ও অ্যাক্টিভিস্ট বৃন্দা কারাট বলছেন, হিটলারের ওই আইনে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অনেক ইহুদিকে জেলে যেতে হয়েছিল, যাদের অনেকে শেষ পর্যন্ত কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে প্রাণ হারান।
কারাট বলেন, শুধু ভিন্ন ধর্মে বিয়ে করার অপরাধে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রেখে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার মঙ্গলবার রাতে যে অর্ডিন্যান্স এনেছে, সেটিও ঠিক একই ধরনের পদক্ষেপ বলেই আমরা মনে করি।
ভারতীয় সংবিধানের আর্টিক্যাল ২১ যে ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার দিয়েছে, এই অর্ডিন্যান্স তার গুরুতর লঙ্ঘন বলেও অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন।
ভারতের ‘স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৯৫৪’ যে ভিন্ন ধর্মের নারী-পুরুষের মধ্যে বিয়েকে স্বীকৃতি দেয়, সে কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন বংশজ জৈনের মতো একাধিক সংবিধান বিশেষজ্ঞ।
এর আগে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের মধ্যে আন্তঃধর্মীয় বিয়ে ঠেকানোর লক্ষ্য নিয়ে ভারতের উত্তরপ্রদেশ সরকার একটি অর্ডিন্যান্স পাশ করে, যে ধরনের আইনি উদ্যোগ ভারতে প্রথম।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্য ক্যাবিনেটের জরুরি বৈঠকে এ অর্ডিন্যান্সটি পাস করানো হয়, যাতে বলা হয়েছে– শুধু একটি মেয়ের ধর্ম পরিবর্তনের উদ্দেশ্য নিয়ে দুই ধর্মের মধ্যে কোনো বিয়ে হলে দোষী ব্যক্তির ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারবে।
‘উত্তরপ্রদেশ বিধিবিরুদ্ধ ধর্ম পরিবর্তন প্রতিষেধ অধ্যাদেশ ২০২০’ নামের এই অর্ডিন্যান্সটিতে আরও বলা হয়েছে, এ ধরনের ধর্মান্তরণের প্রমাণ পাওয়া গেলে সেই বিয়ে বাতিল বলে বিবেচিত হবে।
লাস্টনিউজবিডি/আখি
Comments are closed