বন্ধ হোক সড়কে মৃত্যুর মিছিল

।। আলীমুজ্জামান হারুন।। দেশে সড়ক দুর্ঘটনা উদ্বেগজনক মাত্রায় বেড়ে গেছে, এ কথা অনস্বীকার্য। সরকারের তরফ থেকে নানা রকম চেষ্টা করেও কমানো যাচ্ছে না রাজপথে প্রাণহানি, অঙ্গহানি। এই তো ক’দিনমাত্র আগেও দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় একই দিনে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৫ জন।
ভাঙ্গাচোরা ও সঙ্কীর্ণ রাস্তা, বিপজ্জনক মোড় ইত্যাদি যেমন এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী, তেমনি অদক্ষ ও অসতর্ক চালকরাও কম দায়ী নয় – একথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু চালকদেরও যে সমস্যা থাকতে পারে, তা কি আমরা কখনো ভেবে দেখেছি? তাদেরও যে প্রশিক্ষণ দরকার, লম্বা পথ পাড়ি দেয়ার পর বিশ্রাম দরকার – তা কি আমরা কখনো ভেবেছি?
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে এত-সব সভা-সেমিনার-বক্তৃতা-বিবৃতি – কোথাও প্রসঙ্গটি নিয়ে কেউ আলোচনা করেছেন বলে মনে তো পড়ে না!
তবে আমরা কেউ লক্ষ্য না-করলেও ঠিকই খেয়াল করেছেন একজন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন দূরপাল্লার যানে বিকল্প চালক রাখার, পরিবহনের চালক ও সহকারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার, রাস্তার মাঝে চালকদের বিশ্রামের ব্যবস্থা রাখার, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে রাস্তা পারাপার বন্ধ করার, সিগন্যাল দিয়ে পারাপার এবং সিট বেল্ট পরানো নিশ্চিত করার। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃত নিয়ম হচ্ছে, দূরের যাত্রায় একজন চালক যেন একটানা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাড়ি না চালান।
আপাতদৃষ্টিতে খুব সাধারণ হলেও এ ছোট নির্দেশটির মধ্যে রয়েছে অসাধারণত্ব। আমরা সবাই কেবল চালকদের দোষই খুঁজেছি (দোষ তো আছেই), কিন্তু তাদের সমস্যার কথাটি ভাবিনি। এটি ভাবার কথা ছিল বিশেষজ্ঞদের, কিন্তু তারাও ভাবেননি। ভাবলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।
এখানেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্যতা। অতি সাধারণ বিষয়ও যে তাঁর চোখ এড়িয়ে যায় না, এটাই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, যান চলাচল বিষয়ে আপনার নির্দেশনা দ্রুত কার্যকর হোক, বন্ধ হোক সড়কে মৃত্যুর মিছিল – এটা যেমন কামনা করি, তেমনি চাই আপনার গতিশীল নেতৃত্ব দীর্ঘায়িত হোক। আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নেমে আসুক শান্তির অমিয় ধারা।
Comments are closed