প্রকাশিত: ৯:৫৫:০০ পূর্বাহ্ণ, ৮ জুলাই, ২০২৫
সংগৃহীত ছবি
লাস্টনিউজবিডি, ৮ জুলাই: বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিসসহ একাধিক ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল নির্বাচনকালীন পরিবেশ, পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতির দাবি ও রাজনৈতিক ঐক্য গঠনের তৎপরতা জোরদার করেছে।
এসব কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠছে—তারা কি নির্বাচনী সময়সূচি প্রলম্বিত করতে চাইছে, নাকি বিএনপির বাইরে থেকে একটি বিকল্প জোট গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে?
যদিও এসব দল প্রকাশ্যে বলছে, তারা নির্বাচন চায়—তবে তা ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ’ হতে হবে। নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে তাদের সোচ্চার হওয়া এবং নির্বাচন নিয়ে নানা শর্ত আরোপ করার প্রবণতা থেকেই জন্ম নিচ্ছে সংশয়।
২০২৩ সালের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে ঐক্য ছিল। তবে পরে মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে সংস্কার নাকি পরে—এই বিতর্কে উভয় দলের মাঝে দূরত্ব বাড়ে।
এর ধারাবাহিকতায় জামায়াত ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ একাধিক ইসলামপন্থি দলের সঙ্গে বৈঠক ও আলোচনা শুরু করে, কখনও প্রকাশ্যে, কখনও পর্দার অন্তরালে।
এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই সম্প্রতি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশে জামায়াতসহ একাধিক ইসলামী দলের অংশগ্রহণ হয়। বিএনপির কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
নির্বাচন নয়, আগে দরকার ‘পরিবেশ ও পদ্ধতির সংস্কার’
জামায়াতের মুখপাত্র মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, “মানুষ ভোট দিতে পারবে এমন পরিবেশ নেই। আমরা জনগণের পক্ষে কথা বলছি।” একইসাথে তিনি নির্বাচনের পদ্ধতিগত পরিবর্তনের কথাও জানান, “আমরা চাই সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হোক। এতে জনমতের প্রকৃত প্রতিফলন সম্ভব।”
ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমানও একই কথা বলেন, “লন্ডনের বৈঠকের পর থেকে মনে হচ্ছে বিএনপি আগেভাগেই ক্ষমতায় পৌঁছে গেছে। এখন কিভাবে নির্বাচন হবে?”
খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে মানুষ ইসলামপন্থিদের একসাথে দেখতে চায়। আমরা সেই দিকেই এগোচ্ছি।”
তবে তারা সবাই নির্বাচনের বিলম্ব চায় না বলে দাবি করছেন। বরং তারা বলছেন, সুষ্ঠু পরিবেশ ও উপযুক্ত কাঠামো ছাড়া ভোট আয়োজন অর্থহীন।
বিএনপি’র প্রতিক্রিয়া: ‘গুরুত্ব হারানো দলগুলোর অসন্তোষ’
গত ১৮ জুন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেন, “ভোট হলে যাদের গুরুত্ব থাকবে না, তারাই এখন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণায় নাখোশ।” দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও পিআর পদ্ধতি নিয়ে ‘ভাবার’ পরামর্শ দিয়েছেন।
মাঠে ধর্মভিত্তিক ঐক্য?
পিআর ভিত্তিক নির্বাচনের দাবিতে ১৯ জুলাই ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে জামায়াত। এর আগে ২৮ জুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশেও এ দাবি ওঠে।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, “ভোট যেন ভাগ না হয়, সে লক্ষ্যে আমরা একক প্রার্থী দিয়ে প্রতিটি আসনে যেতে চাই।”
জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, “নির্বাচনের আগে সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান হওয়া জরুরি। এখন যে পরিস্থিতি—সেটা উপযুক্ত নয়।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের পর্যবেক্ষণ
সালাহউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর মনে করেন, “জামায়াতসহ ইসলামপন্থি দলগুলো নির্বাচন বিলম্বের পক্ষে নয় তারা বরং একটি সামগ্রিক ইসলামপন্থি জোট গঠনের চেষ্টা করছে।”
তিনি বলেন, “পিআর পদ্ধতি ও নির্বাচনকালীন পরিবেশ ইস্যু মূলত সরকারের ওপর চাপ তৈরির কৌশল, যাতে সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত হয়।” বিবিসি বাংলা
লাস্টনিউজবিডি/এমবি
সারাদিনের শিরোনাম এবং হাইলাইট, প্রতিদিন সকালে সরাসরি আপনার কাছে।
ইমেইল :
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
কপিরাইট © ২০২৫লাস্ট নিউজ বিডি