খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী: ফখরুল

লাস্টনিউজবিডি,২১ সেপ্টেম্বর,নিউজ ডেস্ক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কারাবন্দি বিএনপি ছেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী ।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল কারাগারে স্থানান্তরিত আদালত রায় দিয়েছেন, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলবে। এটা বেআইনি, এটা তাঁর প্রতি অবিচার, এটা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। খালেদা জিয়া অসুস্থ, তিনি হাঁটতেও পারেন না। অথচ তাঁকে চিকিৎসা না দিয়ে আদালতকে কারাগারে স্থানান্তরিত করে বিচারকাজ পরিচালনা করছে। অথচ আইনে বলা আছে, বিচারকাজ চলতে হবে অভিযুক্ত ব্যক্তির সামনে। আদালত আদেশ দিলেন, তাঁর অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আদালতের এ আদেশ জনগণ মেনে নিতে পারছে না। এ আদেশ পরিবর্তন হওয়া জরুরি। আমরা আবারও দাবি জানাচ্ছি, খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতলে চিকিৎসা দেওয়া হোক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, রফিকুল ইসলাম মিয়া, নজরুল ইসলাম খান, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।
তিনি বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে গায়েবি মামলার সংখ্যা তিন হাজার ৭০৬টি, আর এজাহারে নাম এসেছে তিন লাখ ১৩ হাজারের বেশি, আর অজ্ঞাতনামা আসামি দুই লাখ ৩৩ হাজার ৭৩০ জন, আর আটক করা হয়েছে তিন হাজার ৬০০ জনের বেশি। মূলত নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও বিরোধী মতকে বাইরে রাখতে সরকার নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা দিয়ে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করছে। অথচ নির্বাচনের আগমুহূর্তে পৃথিবীর কোনো দেশে এমন গায়েবি মামলা দায়ের করে না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিশ্বের যেকোনো দেশে নির্বাচনের সময় এলে জনগণকে নির্বাচনমুখী করা হয়। অথচ বাংলাদেশে সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা দখল রাখতে বিরোধী দলের নেতাকর্মী-সমর্থকদের নামে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। যাতে আবারও ৫ জানুয়ারি মতো নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকতে পারে।
ফখরুল বলেন, সারা দেশে এসব গায়েবি মামলার কারণ হচ্ছে, যাতে আওয়ামী লীগ আবারও ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকতে পারে। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো যেন নির্বাচনে আসতে না পারে, এ জন্য সরকার এসব মামলা-হামলার পথ বেছে নিয়েছে। এটা কিন্তু আজকে থেকে না, বেশ কিছুদিন থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতাকর্মীদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করছে। আর এসব করছে যুবলীগ-ছাত্রলীগের ছেলেরা।
খালেদা জিয়াকে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার দাবি থেকে বিএনপি সরে এসেছে কি না জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা কোনো দাবির বিষয় না, খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও তাঁর জীবন-মরণের প্রশ্ন। তাঁর চিকিৎসা জরুরি।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, আপনারা অমানবিকতার পথ পরিহার করে সোজা পথে আসুন। সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। না হলে একদিন জনগণের কাছে জবাব দিতে হবে, কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে বিএনপি নেতা বলেন, এ আইন করা হলো যাতে কেউ আর সরকারের অপশাসন, অন্যায়-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে না পারে। এ আইনে কোনো সরকারি কর্মকর্তার গোপন তথ্য বা দুর্নীতির খবর প্রকাশ করলে ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা। তাহলে বলেন গণতন্ত্র কোথায়?
লাস্টনিউজবিডি/তাওহীদ
Comments are closed