আরও বিপুল কাজ আমাদের সামনে পড়ে আছে:প্রধানমন্ত্রী

লাস্টনিউজবিডি,৩০ আগস্ট,নিউজ ডেস্ক: বিমসটেকের কিছু ভালো সাফল্য আছে যদিও আরও বিপুল কাজ আমাদের সামনে পড়ে আছে। দৃশ্যমান ফলাফল পেতে আমাদের বাস্তব সহযোগিতা এগিয়ে নিতে মৌলিক আইনি কাঠামো সংহত করা প্রয়োজন -জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার কাঠমান্ডুতে সোয়ালটি ক্রাউন প্লাজা হোটেলে অনুষ্ঠেয় চতুর্থ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
উদ্ভোধনী ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সকল ক্ষেত্রে নতুন গতিশীলতার কারণে বৈশ্বিক দৃশ্যপট দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক এই ত্রিমুখী সহযোগিতার মাধ্যমে নতুন গতি ও চলমান বাস্তবতার সঙ্গে সমভাবে এগিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল সৃষ্টি, বিনিয়োগ ও জ্বালানি খাতে যৌথ প্রচেষ্টা, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ এবং অর্থায়ন প্রক্রিয়া গড়ে তোলার মাধ্যমে বিমসটেক ফোরামে আমাদের সহযোগিতা সম্প্রসারিত হতে পারে।’
বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশনের (বিমসটেক) এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘টুওয়ার্ডস এ পিসফুল, প্রোসপারাস এন্ড সাসটেইনেবল বে অব বেঙ্গল রিজন’।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী এবং চতুর্থ বিমসটেক সম্মেলনের চেয়ারপারসন কেপি শর্মা ওলী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটানের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দাশো সেরিং ওয়াংচুক এবং বিমসটেকের অন্যান্য নেতারা উদ্ভোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন,
তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ২০১৬ সালে গোয়ায় অনুষ্ঠিত বিশেষ বিমসটেক রিট্রিট ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। গোয়ায় গৃহীত ১৬ দফা কর্মপন্থার কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হচ্ছে, অনেকগুলো অচিরেই বাস্তবায়িত হবে।
বিমসটেকের কিছু সদস্য দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগে বিদ্যুতের গ্রিড সংযোগের জন্য সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্যদের অংশগ্রহণে এটি বিমসটেক ইলেকট্রিসিটি গ্রিডে পরিণত হতে পারে।
শেখ হাসিনা বিমসটেক থেকে দ্রুত সাফল্য পেতে আরও সমন্বিত, গুরুত্ব প্রদান এবং বাস্তবায়নযোগ্য করে তুলতে বিভিন্ন গুচ্ছ থেকে ১৪টি খাত নির্দিষ্টকরণের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, যোগাযোগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, জ্বালানি, দারিদ্র বিমোচন এবং কৃষিখাত থেকে জনগণ সরাসরি অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে লাভবান হতে পারে যদি এগুলোকে ‘টেকসই উন্নয়ন’ নামে একটি গুচ্ছে শ্রেণিভুক্ত করা যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘সিকিউরিটি, কাউন্টার–টেররিজম, ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ‘নিরাপত্তা এবং স্থায়িত্ব’ নামে অপর একটি গুচ্ছের আওতায় আনা হলে সেটি আমাদের সুরক্ষা দেবে, সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নেবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পিপল টু পিপল কনট্রাক’ নামে তৃতীয় ক্লাস্টারের আওতায় আমাদের সংস্কৃতি ও জনস্বাস্থ্য আনা হলে সেটি আমাদের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে। একইভাবে নতুন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দৃশ্যপটে বিমসটেক কাঠামো এবং সুযোগ মূল্যায়নের বিষয়টি আমরা বিবেচনা করে দেখতে পারি।’
গত সাড়ে চার বছরে বিমসটেককে সামনে এগিয়ে নিতে সহযোগিতার জন্য নেপাল সরকারকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
বিমসটেকের চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দুই দিনের সফরে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৮ মিনিটে নেপালে পৌঁছেন শেখ হাসিনা। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছালে নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী ঈশ্বর পোখারেল এবং নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশরাফি বিনতে শামসসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানকে গার্ড অব অনারসহ লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
পরে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মার সঙ্গে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। এর পর ভুটানের প্রধান উপদেষ্টা দাশো সেরিং ওয়াং চুকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। পরে রাষ্ট্রপতির বাসভবন শীতল নিবাসে নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে নেপালের রাষ্ট্রপতির দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন তিনি।
এর পর বিকেল ৩টায় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সোয়ালটি ক্রাউন প্লাজা হোটেলে অনুষ্ঠেয় ৪র্থ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
লাস্টনিউজবিডি/আনিছ
Comments are closed