টাটা টিয়াগো’ গাড়ির বাংলাদেশে শুভ উদ্ভোধন (ভিডিও)

লাস্টনিউজবিডি, ১৩জানুয়ারি, নিউজ ডেস্ক: অত্যাধুনিক সুবিধাসম্মলিত দ্রুত গতির ‘টাটা টিয়াগো’ গাড়ি নিয়ে এল নিটল-নিলয় গ্রুপ । গাড়ির সঙ্গে বাড়ি অথবা বাড়ির সঙ্গে গাড়ি অফার ঘোষণার মাধ্যমে দেশে টাটার নতুন গাড়ি অবমুক্ত করলো । গাড়িটির মডেল ‘টাটা টিয়াগো এএমটি।’ ম্যানুয়েল এবং অটোমেটিক গিয়ার শিফর্টিং সুবিধাসহ এই গাড়িটির রয়েছে আকর্ষণীয় মাইলেজ।
আজ রাজধানীর একটি পাচঁতারা হোটেলে ভারতীয় এই গাড়ী বাংলাদেশের বাজারে বাজারজাত করা উপলক্ষে এক শুভ উদ্ভোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে টাটা গাড়ীর একমাত্র পরিবেশক নিটল মটরস । এই গাড়ীর শুভ উদ্ভোধন করেন বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, নিটল-নিলয় গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা আহমাদ, মারিব আহমাদ ,ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মোসাব্বির আহমাদ, টাটা মটরসের প্যাসেঞ্জার ভেইকল বিজনেস ইউনিটের প্রেসিডেন্ট মায়ানক পারিক, হেড অব বিজনেস টাটা মটরসের প্যাসেঞ্জার ভেইকল সুজন রায়,ভারতীয় হাইকমিশনের ডেপুটি কমিশনার আদস হাইকা প্রমুখ ।
বিদেশি বিনিয়োগ আনতে বিশেষ দূত মাতলুব আহমাদ
‘টাটা টিয়াগো’ নামে দ্রুত গতিসম্পন্ন আকর্ষণীয় এ গাড়িটি আরামদায়ক ও নির্ঝঞ্জাট ড্রাইভিং এর জন্য অত্যন্ত উপযোগী বলে দাবি করেন টাটা মোটরসের একমাত্র পরিবেশক নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহমাদ। এর মূল্য ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, নিটল নিলয়ের মাধ্যমে টাটা দেশের বাজারে সুলভ মূল্যে নতুন একটি গাড়ি আনলো। আমরা আশা করবো টাটা বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন করবে। কেননা দেশে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
বানিজ্য মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া। আর্থিক স্বচ্ছতার কারণে খাদ্য ও বাসস্থানের চাহিদা ছাড়িয়ে এখন মানুষ গাড়ি কেনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে। অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে গণপরিবহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। টাটা নতুন মডেলের গাড়ি বাজারজাতের মাধ্যমে দেশের মানুষের জন্য ব্যক্তিগত গাড়ি আরো সহজতর করে দিয়েছে। তবে দেশীয় উদ্যোক্তাদের স্থানীয়ভাবে গাড়ি উৎপাদনের পদক্ষেপ নিতে হবে।
নিটল নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, বাংলাদেশের বাজারে টাটা টিয়াগো অনন্য ভূমিকা রাখবে। দেশের মানুষ যেন একসঙ্গে বাড়ি এবং গাড়ি দুটোই সহজে কিনতে পারে সেজন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। শুধুমাত্র ফ্ল্যাটের বুকিং মানি দিয়ে বুঝে নিন ফ্ল্যাটের চাবি। কোন ডাউনপেমেন্ট ছাড়াই কিস্তিতে কিনতে পারবেন গাড়ি। ২০ বছর মেয়াদি কিস্তিতে বাকি টাকা পরিশোধ করা যাবে।
আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘টাটা টিয়াগো একমাত্র কম্পানি যেটা মেইড ইন ইন্ডিয়া করে গাড়ি বাইরের দেশে রপ্তানি করছে। বাজারে জাপান জার্মানিকেও হার মানাচ্ছে ‘টাটা টিয়াগো’।’
তিনি বলেন, ‘দেশে শতকরা ৯ শতাংশ মানুষ নতুন গাড়ি কেনেন। বেশি দামের কারণে বাকিরা রিকন্ডিশন গাড়ি কিনে থাকেন। আমরা রিকন্ডিশন গাড়ির দামে নতুন গাড়ি দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। অচিরেই বাংলাদেশে টাটার সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে গাড়ি উৎপাদন কারখানা চালু করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেশে মোটরসাইকেল উৎপাদন করে সফল হয়েছি। এবার দেশে গাড়ি তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি। এ কাজে আমাদের সহযোগিতা করবে টাটা মোটরস। আমরা প্রত্যাশা করছি বাংলাদেশের মানুষের যানবহন সংকট কমিয়ে আনতে। এজন্য ব্যক্তিগত গাড়ি আমদানীর পাশাপাশি গণপরিবহনও আমদানি করা হচ্ছে।’
‘বাংলাদেশের বাজারে টাটা টিয়াগো অনন্য ভূমিকা রাখবে। জ্বালানী সাশ্রয়ী এবং সুলভে বহুমাত্রিক সুবিধা সম্পন্ন টাটা টিয়াগো সকলের মন জয় করবে বলে আশা প্রকাশ করেন টাটা মোটরসের এই পরিবেশক প্রধান মায়ানক পারিক।’
উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য মাদার তেরেসা অ্যাওয়ার্ড পেলেন মাতলুব আহমাদ
‘টাটা টিয়াগো’ গাড়িটি সম্পর্কে টাটা মটরসের প্যাসেঞ্জার ভেইকল বিজনেস ইউনিটের প্রেসিডেন্ট মায়ানক পারিক বলেন, আরামদায়ক ভ্রমনের জন্য ‘টাটা টিয়াগো’ বছরের সেরা আকর্ষণীয় গাড়ি। প্যাসেঞ্জার গাড়ির মার্কেটে গাড়িটি টাটা মটরসকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। তাছাড়া নান্দনিক ডিজাইনের এ গাড়িটিতে স্পোর্স মুডের জন্য পেপি ড্রাইভ সম্বলিত থাকবে। অটোমেটিক গিয়ারের সুবিধার পাশাপাশি গাড়িটি অধিক জ্বালানী সাশ্রয়ী। টার্ন বাই টার্ন নেভিগেশন অ্যাপ এবং জুক কার অ্যাপ সুবিধা সম্পন্ন গাড়িটি ছয়টি আকর্ষণীয় রঙে পাওয়া যাবে ।টাটা টিয়াগো গাড়িটিতে রয়েছে রিভোট্রোন ১.২ লিটার মাল্টি ড্রাইভ পেট্রোল ইঞ্জিন। এতে ১১৯৯ সিসির থ্রি সিলিন্ডার ইঞ্জিন সংযোজন করা হয়েছে। এই ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ৮৫ পিএস@ ৬০০০ আরপিএম। ম্যাক্স টর্ক ১১৪ এনএম@৩৫০০ আরপিএম।
গাড়িটিতে ৫ স্পিড এএমটি গিয়ার ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয়েছে। গাড়িটির হুইল ব্যাস ২৪০০ মিলিমিটার। ফুয়েল ট্যাংকের জ্বালানির ধারণ ক্ষমতা ৩৫ লিটার।
উল্লেখ্য, বাজারজাতকরনে নিটল-নিলয় গ্রুপ ১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশে টাটা মটরসের একমাত্র পরিবেশক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে আসছে। বিশ্বখ্যাত টাটা মটরস সুনামের সাথে ইউরোপ, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে টাটা কার, বাস এবং ট্রাক বাজারজাত করে আসছে।
সফল হওয়ার গল্প, সাফল্যের পথ
Comments are closed