জবির ছাত্র-ছাত্রীদের উপর হামলা, ছাত্রলীগ কর্মীর বহিষ্কারের দাবিতে মানবন্ধন

লাস্টনিউজবিডি, ২৮ ফেব্রুয়ারি, জবি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের উপর পরীক্ষা চলাকালীন আক্রমনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এর সাধারণ সম্পাদক সীরাজের ব্যক্তিগত মটর সাইকেল চালক সম্রাটের স্থায়ী বহিস্কার এর দাবীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা বিভিন্ন বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে হামলা কারী সম্রাট ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের স্থায়ী ভাবে বহিস্কার এর দাবীতে স্লোগান দিকে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় বোটানিক্যাল গার্ডেনে পরীক্ষা চলাকালীণ সময় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী সম্রাট ও রাহিদ সহ তার দলবল নিয়ে এ হামলা চালায়। সম্রাট ও রাহিদ উভয়ে সামাজ বিজ্ঞান বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
মানববন্ধন কারীরা দাবী করেন , হামলার সময় বেশ কয়েকজন মেয়েকে হামলাকারীরা শারীরীক ভাবে হেনস্থা করেছে।
প্রক্টর অফিসে তারা অভিযোগ পত্র দিতে গেলেও সেখানে সম্রাটের লোকজনেরা অভিযোগ কারীদেরকে হুমুক দিয়ে বলেন “ মুখ চিনে রাখছি ক্যাম্পাসের বাহিরে তোদের দেখে নিবো” এছাড়া অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করতে থাকেন।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া পর্নি জানান, আমরা পরীক্ষা দিচ্ছিলাম এ সময় এসে আমাদের উপর আক্রমণ করেছে এবং আমাদের অনেক মেয়দেরকে যৌন নির্যাতন করেছে। আমি নিজেও এর শিকার। তাই অমাদের দাবী তাকে সহ তার সাথে যারা ছিল তাদের কে বিশ্ববিদ্যালয়থেকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার করার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি এবং দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
মানবন্ধনে অংশ নেয়া এবং হামলার শিকার জুথি বলেন,আমাদের শিক্ষকেরা আমাদের সাথে আছেন, আমাদের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের এ আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
এদিকে , এ হামলার নিন্দাও সেই ছেলে সহ তার সাথে যারা ছিল তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী জবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আল আমীন বলেন, এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আমি ও দপ্তর সম্পাদক রুহুল আমীন। আমরা চারুকলার এ মানববন্ধনে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছি। যদি আজকের মধ্যে সম্রাটের শাস্তি না হয় তবে আমরা তাদের সাথে একাত্ত হয়ে আন্দোলন করবো।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানায়, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষারত অবস্থায় জবির বোটানিক্যাল গার্ডেনে অবস্থান করছিলেন। এমন সময় ছাত্রলীগ কর্মী সম্রাট গার্ডেনে প্রবেশ করতে চাইলে পরীক্ষার্থী আবেশ তাকে নিষেধ করেন। এতে সম্রাট ক্ষিপ্ত হয়ে সেখানে নারী শিক্ষার্থী জ্যোতীকে সহ আরো কয়েকজন ছাত্রীকে নানান ভাবে ইভটিজিং করতে থাকে। সম্রাটকে আবেশ নামের শিক্ষার্থী বাঁধা দিলে সে আরো বেশি ক্ষেপে উঠে এবং বাগবিতন্ডার একপর্যয়ে সে চড়াও হয়। এরপর সম্রাট তার সাথে আরো ৭/৮জন ছাত্রলীগ কর্মীকে নিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিসোটা দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।
এসময় নারী শিক্ষার্থীদেরকে শারিরিক ভাবে লাঞ্চিত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন অনেকে। এ সময় সম্রাটের সাথে রাহিদ নামের এক জন ছিল বলে জানা যায়।
এ ঘটনায় নারী শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।আহত শিক্ষার্থীরা হলেন জয় (২৩) , সনেট (২২), কেয়া (২০), মৌমিতা (২০), সোহাগ (২২), আবেশ (২২),সুশমীতা (২০),জ্যোতী (২১) সহ আরো অনেকেই।
জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, সম্রাট ছাত্রলীগের কেউ না। আমি তাকে চিনি না। যেহেতু কোন এক সম্রাট চারুকলার বিভাগের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে ,আর চারুকলা বিভাগ লিখিত ভাবে অভিযোগ দিয়েছে। সেখানে আমরাও তার সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি। না চিনে থাকলে সম্রাটের মটরসাইকেলের পিছনে তিনি কিভাবে বসলেন বিষয়ে জানতে চাইলে এর কোনো উত্তর দেননি তিনি।
এ ব্যাপারে চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বজলুর রশিদ খাঁন সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা বোটানিক্যাল গার্ডেনে আউটডোর পরীক্ষা দেওয়ার সময় ছাত্রলীগের কিছু কর্মী তাদের উপর হামলা চালায়।
আমরা জবি প্রশাসনকে লিখিত ভাবে অভিযোগ দিয়েছি, ভিসি স্যারকে জানিয়েছি। আমরা এ ধরনের ন্যাক্কার জনক ঘটানার তীব্র নিন্দা ও হামলা কারীদের দৃষ্টান্ত মুলক বিচার দাবি করছি।
এ বিষযে জানতে চাইলে জবি ভিসি ড.মীজানুর রহমান জানান, “আমরা তারে সাময়িক বহিস্কার করেছি এবং তদন্ত কমিটি করছি তাদের তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।”
লাস্টনিউজবিডি, এ এস
Comments are closed