মধুখালীর ৫০ শয্যা হাসপাতালটি মুখ থুবরে পরে আছে

শাহজাহান হেলাল,
লাস্টনিউজবিডি, ৩১ আগস্ট, মধুখালী (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক সংলগ্ন ৩১ আসন বিশিষ্ঠ একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি স্থানীয় ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সরকার ২০১৩ সালে হাসপাতালটি ৫০ শয্যার ঘোষণা দেন।
এর পর স্বাস্থ্য বিভাগ ১০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪ তলা বিশিষ্ঠ একটি হাসপাতাল ভবন, একটি পরিবার পরিকল্পনা অফিস কাম স্টোর ভবন এবং কর্মচারীদের জন্য ৪ তলা বিশিষ্ঠ একটি ডরমেটরি ভবন নির্মিত হলেও সেটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আর্থিক অনুমোদন না থাকার কারণে জনগুরুত্ব পূর্ন হাসপাতালটি চিকিৎসা সেবা থেকে মুখ থুবরে পড়ে আছে দীর্ঘ দিন।
ওই ভবন গুলো সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মো. ওয়াজেদ মিয়া গত ৩০ মে ২০১৫খ্রিঃ তারিখে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেন।
কিন্তু প্রশাসনিক অনুমোদন না থাকায় এর কার্যক্রম চালু করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ৩১ শয্যা মধুখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি কর্মচারী সুইপার, জুনিয়র মেকানিক্স, স্বাস্থ্য সহাকারি, এম এল এস এস, ওয়ার্ড বয় এবং নিরাপত্তা প্রহরীসহ ৩০টি পদ শুন্য থাকায় সেটিও সমস্যায় জর্জরিত আছে।
এ ছাড়া পরিবার পরিকল্পনা নতুন ভবন নির্মিত হলেও উদ্বোধন না হওয়ায় হাসপাতালের ৫ টি কক্ষ তাদের অফিস থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউট ডোরে চিকিৎসকগণ রোগী দেখতে পারছেন না জায়গার কারনে।
দুইটি এ্যম্বুলেন্স থাকলেও ড্রাইভার মাত্র এক জন।সুখের বিষয় প্রায়ই হাসপাতালের ভিতরে ব্যাক্তি মালিকানাধীন এ্যাম্বুলেন্স দেখা যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হাফিজুল ইসলাম জানান, মধুখালী হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত হওয়ার বর্ধিত করণ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গত ৩০ মে ২০১৫ তারিখে ৪তলা বিশিষ্ঠ হাসপাতাল ভবনসহ আরও দুটি ভবন সম্পন্ন হয়।
কিন্তু প্রশাসনিক অনুমোদন না থাকায় সেটি উদ্বোধন বা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতাল ভবনটিতে নিচ তলায় ট্রমা সেন্টার সংশ্লিষ্ট একটি এসি অপারেশন থিয়েটার, এক্স্রে বিভাগ, একটি অবজারভেশন রুম, ১টি পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড রয়েছে।
দ্বিতীয় তলায় ওয়ার্ড, বর্হিবিভাগ, সার্জিক্যাল চিকিৎসকদের রুম, নার্স রুম এবং ইপিআই রুম। ৩য় ও ৪র্থ তলায় অপারেশন থিয়েটার, পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড এবং দুটি ক্যাবিন।
তিনি বলেন, ১ বছর তিন মাস আগে ভবন নির্মিত হলেও প্রশাসনিক অনুমোদন না থাকায় ও যন্ত্রপাতির নাথাকা ৫০ শয্যার হাসপাতালটি চালু হচ্ছে না।
ফরিদপুর সিভিল সার্জন ডা. অরুণ কান্তি বিশ্বাস জানান, এটা আইনী জটিলতা। ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন থাকলেও মূলত যন্ত্রপাতির স্বল্পতা এবং আর্থিক অনুমোদন না থাকায় এটা উদ্বোধন বা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
ফলে এটা ‘নামে আছে কাজে নেই’। হাসপাতালটি ৫০শয্যা চালু হলে রোগীর খাবার, যন্ত্রপাতি, স্টাফসহ বিভিন্ন উপকরণ প্রয়োজন হবে।
যে কারণে এ অবস্থায় রয়েছে। তবে চলতি অর্থ বছরে হাসপাতালটির সকল আর্থিক অনুমোদন পাওয়ার সম্ভব হবে বলে তিনি দাবী করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেক্সটি পৌর সদরে অবস্থিত বিভিন্ন ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার বা প্যাথলজিক্যাল লাবের দালালদের দক্ষলে।
ওদের যেমন রোগী নিয়ে টানাটানি তেমনি ভাবে ঔষধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের ডাক্টারদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানা টানি আমার কোম্পানীল ঔষধ আছে কিনা জাচাই করাই লক্ষ্য আর কোম্পানীর পক্ষ থেকে যেটা দেওয়া হলো সেটা হালাল করা।
হাসপাতালে ডিউটি আওয়ারে ডাক্তারগন যখন রোগী দেখেন তখন সবচেয়ে বিরক্তিকর ব্যাপার হলো ঔষধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা ডাক্তারের পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন পরামর্শ বা তার কোম্পানীর ঔষধ লিখতে উবুদ্ধ করেন।
ঔষধ কোম্পানী বিক্রয়প্রতিনিধি ও ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার বা প্যাথলজিক্যাল লাবের দালালদের ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন আমি অনেক চেষ্টা করেও তাদেরকে নিয়োন্ত্রনে আনা সম্ভব হয় নাই।
মধুখালী উপজেলার ৩ লাখ জনগনের একমাত্র সরকারি হাসপাতালটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক সংলগ্ন অবস্থিত ও চতুর্পাশে বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ন সড়ক রয়েছে যেখানে প্রতিদিন একটা না একটা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে জরুরী চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।
এই জনগুরুত্বপূর্ন হাসপাতালটি যাতে দ্রুত কার্যক্রম চালু হয় এর জোড় দাবী এলাকাবাসীর।
লাস্টনিউজবিডি, এ এস