জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন

লাস্টনিউজবিডি, ৩১মার্চ, ঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার দুর্নীতি দমন কমিশনের সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।
আগামী ৭ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ জামিনে থাকা তিনজনের ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য করেছে আদালত।
এদিন এই তিনজনকে আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
অন্য দু’জন হচ্ছেন- জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান। এজন্য তাদেরকে ওইদিন আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা দু’টির বিচারিক কার্যক্রম চলছে রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতে।
বৃহস্পতিবার ৩২তম ও শেষ সাক্ষী তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদকে আসামিপক্ষের জেরার মধ্য দিয়ে শেষ হয় মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা।
বেলা ১১টা থেকে প্রধান খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে হারুন-অর রশিদের জেরা শুরু হয়। সাক্ষীকে আসামি মনিরুল ইসলাম খানের পক্ষে অসমাপ্ত জেরা করেন তার আইনজীবী টিএম আকবর। আসামিপক্ষ তাদের পক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী থাকবেন না বলে জানান। পরে ৭ এপ্রিল আসামির ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য করে তাদেরকে হাজির থাকতে বলেন।
দুই মামলায়ই খালেদা জিয়ার পক্ষে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অনুপস্থিতির জন্য আবেদন জানান তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া ও আব্দুর রেজ্জাক খান। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ও মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে খালেদার আবেদনের উল্লেখ করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার আবেদন জানান তারা।
আদালত খালেদার অনুপস্থিতির আবেদন মঞ্জুর ও মামলা স্থগিতের আবেদন নামঞ্জুর করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের আদেশ দেন।
অন্যদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদকে আসামিপক্ষের জেরা ও নতুন সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের দিনও ধার্য করেন ৭ এপ্রিল।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। অন্য আসামি খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
অন্যদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আসামি মোট ছয়জন। খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য পাঁচজন হচ্ছেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক, বাকিরা জামিনে আছেন।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
দুই মামলারই বাদী হলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের তৎকালীন সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ খান।