ভুট্টা চাষে দেশের শীর্ষে চুয়াডাঙ্গা

আব্দুর রহমান(জসিম),
লাস্টনিউজবিডি, ২৯ ফেব্রুয়ারি, চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় জেলায় ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে ভুট্টার আবাদ। লাভজনক হওয়ায় জেলার কৃষককুল এই আবাদের দিকে ঝুকছে। এ জেলার আবহাওয়া ভুট্টা চাষের উপযুগী হওয়ায় ও উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় প্রতি বছরি এজেলায় ভুট্টার আবাদ বাড়ছে ব্যাপক ভাবে। চলতি মৌসুমে দেশের সকল জেলাকে পিছনে ফেলে ভুট্টা আবাদে চুয়াডাঙ্গা জেলা এবার শীর্ষে অবস্থান করছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরসূত্রে জানা গেছে, সারা দেশের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলার এবার ভুট্টার আবাদ সবচেয়ে বেশি হয়েছে। লাভ জনক আবাদ হওয়ায় গত কয়েক বছর থেকে এ জেলায় ভুট্টার আবাদ বেড়েছে। অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় ভূট্টা আবাদের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। চুয়াডাঙ্গায় প্যাসিফিক-৯৮১, পাইনিয়ার ভি-৯২ ও ৯৬, এলিট, মিরাক্কেল, উত্তরণ, সানশাইন, সিপি এবং পালোয়ান এ ৯ জাতের ভুট্টা বেশি চাষ হয়। তবে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে প্যাসিফিক-৯৮১, পাইনিয়ার ভি-৯২ ও ৯৬ এবং এলিট।
জেলায় গত বছর (২০১৩-১৪ মৌসুমে) ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩৭ হাজার ৩৭৫ হেক্টর। ২০১৩-১৪ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪৭ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছিল। ২০১৩-১৪ মৌসুমে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় আবাদ হয়েছিলো ১৪ হাজার ৮৯০ হেক্টর, দামুড়হুদায় ১৪ হাজার ১৮০ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ১২ হাজার ৮৬০ হেক্টর ও জীবননগর উপজেলায় ৬ হাজার ৫শ হেক্টর।
এ বছর ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৪৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে কৃষকরা এবার আবাদ করেছে, ৪৮ হাজার ৪৩০ হেক্টর যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১১ হাজার ৫৫ হেক্টর বেশি।
জেলার দামুড়হুদা উপজেলার মোক্তার পুর গ্রামের ভুট্টা চাষি হুসাইন ও পার-দামুড়হুদা গ্রামের কামাল হোসেন জানান, ধানের আবাদের চেয়ে ভূট্টার আবাদ অনেক লাভজনক। তাই তিনি ধানের আবাদ কুমিয়ে দিয়ে এ বছর ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন। ভুট্টা আবাদে বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হলেও কমপক্ষে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকার ভুট্টা বিক্রি করা সম্ভব হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ নির্মল কুমার দে জানান, এবার দেশের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা ভুট্টাচাষে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। তিনি আরও জানান, ভুট্টা চাষে খরচ যেমন কম, অন্যদিকে ফলন এবং লাভও বেশি। এ কারণে চাষিরা ভুট্টার চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
ভুট্টার নানাবিধ ব্যবহার যেমন, ভুট্টার দানা মানুষ খাদ্য হিসেবে, বাণিজ্যিকভাবে মৎস্য চাষ, লেয়ার ও ব্রয়লার মুরগীর ফার্ম ও গরু মোটা-তাজাকরণ প্রকল্পের জন্য এখানেই ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া, ভুট্টার শুকনো গাছ ও ভুট্টা মাড়াইয়ের পর মোচা জ্বালানি হিসেবে বাজারে বিক্রি করে দেড় থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়।
লাস্টনিউজবিডি, আরজে