গৃহকর্মী ধর্ষণের ১৫ দিন পরে এজাহার রেকর্ড
মো. কায়েস খান,
ঝালকাঠি প্রতিনিধি: অবশেষে আদালতে নির্দেশের ১৫ দিন পরে আলোচিত বিএনপি নেতা কবির হোসেন জমাদ্দারের বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নবম শ্রেণির ছাত্রী (১৪) কে ধর্ষণের অভিযোগটি ২৮ ফেব্রুয়ারী বিকেলে এজাহার হিসাবে রেকর্ড করেছে নলছিটি থানার ওসি মাকসুদুর রহমান।
১৬ ফেব্রুয়ারী ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রী বাদী হয়ে জেলা বিএনপির জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক, ব্যবসায়ী কবির জমাদ্দারের বিরুদ্ধে ঝালকাঠি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে মামলা দায়ের করলে বিচারক শফিকুল করিম নলছিটি থানার ওসিকে মামলাটি রেকর্ডের নির্দেশ দেয়। থানা পুলিশ নানা অজুহাত দেখিয়ে সময় ক্ষেপন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ অবস্থায় গৃহকর্মী স্কুলছাত্রী ও তার অসহায় পরিবার নিরপেক্ষ ও সত্য তদন্ত নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। মামলার বিবরণ ও ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী জানায়, সুবিদপুর ইউনিয়নের পূর্ব গোদন্ডা গ্রামের শুকতাঁরা ব্রিকফিল্ডের মালিক বিএনপি নেতা নারী লিপ্সু কবির জমাদ্দারের ফিল্ডের কর্মচারী হিসাবে কাজ করতো ধর্ষিতার পিতা আঃ মন্নান খান । পরিবারের দারিদ্রতার সুযোগে পড়াশুনা ও বাড়িতে ফুডফরমায়েস কাজের কথা বলে তাকে প্রায় ৩ বছর পূর্বে ব্যবসায়ী কবির জমাদ্দারের বাড়িতে রাখেন। পাশপাপাশি সে গত বছর তালতলা ইলেন ভূট্টো বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে জেএসসি পরিক্ষায় পাশ করে বর্তমানে ৯ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
এ অবস্থায় ১৭ জুলাই ২০১৫ইং তারিখ কবির জমাদ্দার পিস্তÍলের ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে’ তাকে সহ তার বাবা-মাকেও হত্যা কারার হুমকি দেয়ায় সে প্রাণের ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখে। এভাবে দীর্ঘ দিন ধরে ধর্ষণের কারণে গৃহকর্মী স্কুলছাত্রী গর্ভবতী হয়ে পড়লে দু’মাস পূর্বে বরিশালের ডাক্তার খালেদা পারভিনের কাছে নিয়ে তার গর্ভপাত ঘটায়।
গত ৮ জানুয়ারি স্কুল ছাত্রী তার মায়ের অসুস্থতার সুযোগে বাড়িতে চলে আসে ও পিতা-মাতা আত্মীয়-স্বজনকে ধর্ষক কবির জমাদ্দারের বিকৃত যৌনাচারের বিষয় জানায়। এতে ধর্ষিতার পিতা আঃ মন্নান খান ক্ষুব্ধ হয়ে আসামী কবির জমাদ্দারের কাছে তার মেয়ের সর্বনাশের বিষয় জিজ্ঞাসা করলে সে কিছু টাকা-পয়সা নিয়ে চুপচাপ থাকতে বলে।
এতে তারা আরো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে লম্পট কবির জমাদ্দার ধর্ষিতা, তার পিতা-ভাইসহ সহ ৫জনকে আসামী করে জিআর (২৪/(১৬) একটি চুরির মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি জানতে পেরে ৪ ফেব্রুয়ারী ধর্ষিতা, তার পিতা, চাচাতো ভাই ও বোন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনাবেদন করলে আদালত ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।
পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একের পর এক সংবাদ প্রকাশ হলে ১২ ফেব্রুয়ারী আদালত থেকে জামিনে মুক্তিলাভ করেই ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীটি ১৪ ফেব্রুয়ারী নলছিটি থানায় ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে গেলে থানার ওসি মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। পরে বাধ্য হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারী সে বাদী হয়ে ঝালকাঠি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের মামলা দায়ের করলে আদালত অভিযোগটি সরাসরি এজাহার হিসাবে রেকর্ডের নির্দেশ দেন।
কবির হোসেন জমাদ্দার বলেন, ওই গৃহকর্মী ও তার পরিবারের লোকজন মিলে আমার ঘরে চুরি করায় আমি মামলা দেয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে এ মামলার ষড়যন্ত্র চলছে। তাদের এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তাকে হেয় করার জন্য এরকম মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।