সাংবাদিক গৌতম দাস হত্যা মামলায় ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ঢাকা, ২৭ জুন (লাস্ট নিউজ) : সমকালের ফরিদপুর ব্যুরোপ্রধান, নির্ভীক সাংবাদিক গৌতম দাস হত্যা মামলায় ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। গত এক যুগে দেশের কোনো সাংবাদিক হত্যা মামলায় এটিই প্রথম রায়।
বর্তমানে এই মামলায় ৯ আসামির ৮ জন কারাগারে রয়েছেন। গত ১৯ এপ্রিল মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণার পর তাদের জামিন বাতিল করে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূরুদ্দীন এ রায় ঘোষণা করেন। ফরিদপুর শহরের মুজিব সড়কের সংস্কার ও পুননির্র্মাণ কাজের অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ পরিবেশন করায় সাংবাদিক গৌতম দাসের ওপর ক্ষুদ্ধ হয় তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকারের মদদপুষ্ট ঠিকাদারগোষ্ঠী ও তাদের সহযোগী সন্ত্রাসীচক্র।
২০০৫ সালের ১৭ নভেম্বর ভোরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা সমকালের ফরিদপুর ব্যুরো অফিসে ঢুকে সাংবাদিক গৌতমকে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ওইদিনই সমকাল পত্রিকার পক্ষে বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন সমকালের স্থানীয় প্রতিনিধি হাসানউজ্জামান।
দুইমাস পর ২০০৫ সালের ১৯ জানুয়ারী ফরিদপুরের আদালতে ১০ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোলাম নবী।
পরবর্তীতে হত্যা মামলাটি চাঞ্চল্যকর বিবেচনা করে ২০০৬ সালের ২৮ আগস্ট ফরিদপুরের আদালত থেকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে স্থানান্তর করা হয়।
কিন্তু ২০০৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আসামিপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলাটির কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। এরপর গত ৬ বছরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে মামলাটির কার্যক্রমের ওপর দফায় দফায় স্থগিতাদেশ জারি করেন হাইকোর্ট। ফলে ৭ বছরের মধ্যে পুরো ৪ বছরই বন্ধ ছিল বিচারিক কার্যক্রম।
মামলার আসামি আসিফ ইমরান, আসিফ ইমতিয়াজ বুলু, কাজী মুরাদ, কামরুল ইসলাম আপন, সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, রাজিব হোসেন মনা, আসাদ বিন কাদির, এ্যাপোল বিশ্বাস ও তামজিদ হোসেন বাবু গৌতম দাস হত্যাকাণ্ডের পর থেকে বিভিন্ন সময় পুলিশ অথবা র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়।
অপর আসামি জাহিদ পলাতক অবস্থায় ২০০৬ সালের ১২ অক্টোবর ঢাকার পিজি হাসপাতালে মারা যায়। গ্রেফতার হওয়া আসামিদের মধ্যে আসাদ, এ্যাপলো ও বাবু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে ইতিমধ্যে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।