গ্রামীণ ব্যাংককে একটি নিয়ন্ত্রণ কাঠামোতে আনা হবে: অর্থমন্ত্রী
ঢাকা,২৭জুন (লাস্টনিউজ): অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, গ্রামীণ ব্যাংককে অবশ্যই একটি নিয়ন্ত্রক কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)-এর অধীনে গ্রামীণ ব্যাংককে তার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “শুরু থেকেই গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা (রেগুলেটরি বডি) নেই। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে নয়, আবার এমআরএ’র অধীনেও নয়।”
তিনি বলেন, “কমিশনকে আমি ডাকিনি, তারাই আমার কাছে পরামর্শের জন্য এসেছিল। কিন্তু আমি তাদের বলেছি, সরকারের লোক হিসেবে আমি তো কোনো পরামর্শ দিতে পারি না। আমি শুধু সিদ্ধান্ত নেব। কমিশনের জন্য যে ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ তৈরি করে দেয়া হয়েছে সেটাই তাদের কাজ করার জন্য যথেষ্ট।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমি তাদের বলেছি, তোমরা বৈঠক করতে চাও করো, সেটা তোমাদের বিষয়। তাদের সেই বৈঠকে ইউনূস সাহেবকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং সেখানে এটাও বলা হয়েছে যে, এটা কমিশনের প্রস্তাব। কিন্তু এটা নিয়ে ড. ইউনূসের সংবাদ সম্মেলন করার কোনো প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু তিনি আসলে রাজনীতিবিদ। তাই তিনি এসব করছেন।”
‘গ্রামীণ কমিশন গঠন করা হয়েছিল গ্রামীণ ব্যাংকের বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখার জন্য। কিন্তু কমিশন এখন গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলছেন সাংবাদিকদের এমন কথার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রক কাঠামো কেমন হওয়ার উচিত সে বিষয়ে সুপারিশ করার জন্য কমিশনের টামর্স অব রেফারেন্সে বলা হয়েছে। কমিশন গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান অবস্থার ওপর প্রতিবেদন তৈরি করেছে। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।”
‘কমিশন গ্রামীণ ব্যাংকের ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের কাছে হস্তান্তরের সুপারিশ করেছে’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “না, তারা এটা সরকারকে দিতে বলছে না, তারা এটা বলতে পারে না।”
‘গ্রামীণ টেলিকম’ প্রসঙ্গ মন্ত্রী বলেন, “গ্রামীণ টেলিকম একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ড. ইউনূস এটা গড়ে তোলেন। কমিশন প্রাথমিকভাবে যা পেয়েছে সেটা হচ্ছে, চুক্তি ছিল গ্রামীণ টেলিকমের ৫১ শতাংশ শেয়ারে জাতীয় অংশগ্রহণ (ন্যাশনাল পার্টিসিপেশন) থাকবে। বাকি ৪৯ শতাংশ অন্যদের। কিন্তু গ্রামীণ টেলিকম তাদের শেয়ার নেয়নি। সেটা নিয়েছে টেলিনর। কিন্তু এখন তো এই শেয়ারের ৫১ শতাংশ পাওয়া যাবে না, কারণ এর ১০ শতাংশ শেয়ার তারা বাজারে ছেড়ে দিয়েছে। এখন গ্রামীণফোনের কত শতাংশ শেয়ার সরকার পাবে সেটা নির্ধারণ করবে কমিশন। কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়ার পর সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি আরো বলেন, “গ্রামীণফোন যে শেয়ারটি ক্রয় করেছে সেটা বাংলাদেশী কোম্পানির শেয়ার। যদিও গ্রামীণফোন দাবি করছে যে, তারা নিয়ম-কানুন মেনেই এ শেয়ার ক্রয় করেছে। কিন্তু এখন এই শেয়ারগুলো কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায় সেই উপায় খুঁজছে কমিশন।”